সমাচার ডেস্ক
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ১৫৬ উপজেলায় ভোটগ্রহণ শেষে হয়েছে। এখন চলছে ভোট গণনা। আজ মঙ্গলবার (২১ মে) সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে বিকেল ৪টায় শেষ হয়। এ ধাপে ২৪ উপজেলায় ইলেট্রিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) এবং বাকি উপজেলাগুলোতে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হয়। বিক্ষিপ্ত কয়েকটি ঘটনা ছাড়া আজকের ভোটগ্রহণ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
সকালে কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কম থাকলেও পরে কিছুটা বাড়ে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে জোরদার করা হয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ১৫৬টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ শেষে চলছে গণনা। পছন্দের প্রার্থীকে বেছে নিতে সকাল থেকেই ভোটারদের লাইন দেখা যায়। সকালে কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে ভোটার উপস্থিতি।
২৪টি উপজেলায় ইভিএমে এবং বাকিগুলোতে ভোট হয় ব্যালট পেপারে। দয়েক জেলায় বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া মোটামুটি নির্বিঘ্নেই ভোট দেন ভোটাররা। ভোটের পরিবেশ নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই প্রার্থীদেরও। নিবিঘ্ন ও শান্তিপূর্ণ ভোটের সব ব্যবস্থা আগে থেকেই নেয় নির্বাচন কমিশন। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে, প্রতিটি কেন্দ্রে জোরদার করা হয় নিরাপত্তা। ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে মোট ভোটার ৩ কোটি ৫২ লাখের বেশি।
নাটোরের লালপুর ও বাগাতিপাড়া উপজেলা পরিষদে নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষে চলছে গণনা। নির্ধারিত সময় শেষে প্রতিটি প্রিজাইডিং অফিসারের নেতৃত্বে পুলিশ পাহারায় কক্ষ থেকে ব্যালট বাক্স সংগ্রহ করে গণনার কক্ষে নিয়ে যায় হয়। পরে সেখানে প্রিজাইডিং অফিসার ও প্রশাসনের সহযোগিতায় প্রার্থীর পোলিং এজেন্টদের মাধ্যমে ভোটগণনা শুরু হয়।
রির্টানিং কর্মকর্তা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মাসুদুর রহমান জানান, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে প্রতিটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। গণনা শেষে স্ব স্ব উপজেলা পরিষদ থেকে ফলাফল ঘোষণা করা হবে। তবে কত শতাংশ ভোট পড়েছে সে বিষয়ে এখন কোন তথ্য দিতে পারেননি তিনি।
শেরপুরের উৎসবমুখর পরিবেশে শেরপুরের দুইটি উপজেলায় ভোটগ্রহণ শেষে চলছে গণনা। নির্বাচনে কোন ধরনের সহিংসতা ও কেন্দ্র বন্ধের ঘটনা ঘটেনি। তবে সকাল থেকে ভোটার উপস্থিতি খুব কম লক্ষ করা গেছে। এই নির্বাচনে নকলা উপজেলায় বিভিন্ন পদে ১৪জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে-৫জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে-৫জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪জন। অপরদিকে, নালিতাবাড়ী উপজেলায় বিভিন্ন পদে ১২জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে-৪জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে-৪জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪জন।
খুলনার তিন উপজেলায় সুষ্ঠ ভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। দুপুর ২ টায় তিন উপজেলা নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা এ টি এম শামীম মাহামুদ জানান, খুলনার তিন উপজেলায় ৩০ দশমিক ৭৭ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে। খুলনার তেরখাদা, দীঘলিয়া ও ফুলতলা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে ১০ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে ১৫ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে ৯ জন।
এদিকে, কোন প্রকার অপ্রিতিকর ঘটনা ছাড়াই বরিশালে শেষ হয়েছে দ্বিতীয় ধাপে মুলাদি ও হিজলা উপজেলা নির্বাচন। প্রায় ৩৬ শতাংশ ভোট কাষ্ট হয়েছে বলে জানা গেছে। আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা রয়েছে কঠোর অবস্থানে। এর আগে উৎসব মুখর পরিবেশে বরিশালের এই দুটি উপজেলায় অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় ধাপে ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন।
এদিকে, নির্বাচন সুষ্ঠভাবে সম্পন্নের লক্ষে মুলাদি উপজেলায় ৩ প্লাটুন ও হিজলা উপজেলায় দুই প্লাটুন বিজিবি মোতায়ন করা হয়। এর পাশাপাশি প্রতিটি কেন্দ্রে ৫-৬ জন করে পুলিশ সদস্য ও ১৩ জন করে আনসার সদস্য নিয়োজিত ছিলেন। এছাড়া র্যাবের বেশ কয়েকটি টিম টহলসহ আইনশৃংখলা বাহীনীর অন্যান্য সদস্যরা নিয়োজিত ছিলো।
মুলাদি উপজেলায় মোট ভোটার ১ লাখ ৭৩ হাজার ৫৪৮ জন। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৩ জন, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অপরদিকে, হিজলা উপজেলায় মোট ভোটার ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২১ জন। এখানে চেয়ারম্যান পদে ৫ জন, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।
নওগাঁ জেলার ৩টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষে এখন গণনা চলছে। উপজেলা ৩টি হচ্ছে নিয়ামতপুর, পোরশা এবং সাপাহার উপজেলা। সকাল ৮টা থেকে নিয়ামতপুর উপজেলার ৭৯, পোরশা উপজেলার ৪১ এবং সাপাহার উপজেলার ৫২টিসহ মোট ১৭২টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শেষে চলছে গণনা।
এই তিন উপজেলায় মোট ৪৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ১৩ জন, পুরষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৯ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৪ জন। উপজেলা ভিত্তিক প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সংখ্যা হচ্ছে নিয়ামতপুর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৬ জন, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন, পোরশা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৪ জন, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১০ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬ জন এবং সাপাহার উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৩ জন, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন প্রার্থী।
এ তিন উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ৪লাখ ৫৭ হাজার ৩৮৫ জন। এর মধ্যে নিয়ামতপুর উপজেলায় ২ লাখ ১১ হাজার ৭৫৬ জন, পোরশা উপজেলায় ১ লাখ ৮ হাজার ১৭০ জন। জেলা নির্বাচন অফিসার আরিফুজ্জামান তারিফুজ্জামান তাৎক্ষণিকভাবে কত শতাংশ ভোট পড়েছে তা জানাতে পারেননি। তবে গ্রহণের হার ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ হতে পারে বলে ধারণা করছেন।
ঠাকুরগাঁওয়ে দুই উপজেলায় ভোটগ্রহণ শেষ চলছে গণনা। ঠাকুরগাঁ সদর ও রানীশংকৈল উপজেলার ৩৫১ টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শেষে এখন চলছে ভোট গণনা। এই দুইটি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে সাতজন সহ অন্যান্য পদে ২১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বিচ্ছিন্ন দুই একটি ঘটনা ছাড়া এই দুইটি উপজেলায় শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে।
দিনাজপুরের বিরল, বোচাগঞ্জ, কাহারোল ও বীরগঞ্জ চার উপজেলায় সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। এই ৪টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান-ভাইস চেয়ারম্যানসহ ৫১ জন ভোট যুদ্ধে প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ১৮ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২১ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১২ জন প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন । সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণের লক্ষ্যে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিলো।
চার উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ৭ লাখ ৫৩ হাজার ৩২২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৩ লাখ ৮০ হাজার ৪১৭ জন, নারী ভোটার ৩ লাখ ৭২ হাজার ৯০৫ জন।