আবাসিক হলের সিট দখল নিয়ে ছাত্রদলের সংঘর্ষ,হত্যাচেষ্টার অভিযোগ

- আপডেট সময় : ১০:৪৭:০২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ৪ বার পড়া হয়েছে
জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবিপ্রবি) আবাসিক হলে সিট দখলকে কেন্দ্র করে শাখা ছাত্রদলের দুই পক্ষের মধ্যে তীব্র বিরোধ দেখা দিয়েছে।
এ ঘটনায় ছাত্রদলের এক নেতার বিরুদ্ধে অন্য নেতাকে ছুরিকাঘাতে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী নেতার লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি তদন্ত করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
লিখিত অভিযোগে জানা যায়, গত ১৩ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল শাখার সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এ কে এম আবদুল্লাহ আল মাসুদ এবং তৃতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থী ও যুগ্ম আহ্বায়ক ফয়সাল আহমেদ দুজন মিলে সমাজকর্ম বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক ইকরাম হোসেনের রুম (হল-২০৩ নম্বর) এ প্রবেশ করেন। সেখানে একটি সিট দখলকে কেন্দ্র করে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন তারা।
অভিযোগে ইকরাম হোসেন উল্লেখ করেন, উক্ত সিটে আগে সমাজকর্ম বিভাগের দ্বিতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থী সোহান ও রাশেদ অবস্থান করতেন। বর্তমানে হলে নতুন করে কোনো সিট বরাদ্দের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তিনি সেখানে নতুন কাউকে উঠতে দিতে রাজি হননি। কিন্তু অভিযুক্তরা জোর করে সিএসই বিভাগের চতুর্থ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল সদস্য মো. জোবাইদ হোসাইনকে ওই সিটে তোলার চেষ্টা করেন। এ সময় ইকরাম নিজের কিছু ব্যক্তিগত জিনিস সরাতে গেলে তাদের বাধা দেন। ধমকাধমকি ও বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে উত্তেজনা তৈরি হয়।
অভিযোগে আরও বলা হয়, তখন ছাত্রদল সদস্য জোবাইদ হোসাইন সিটের ওপর রাখা একটি ছুরি তুলে নিয়ে ইকরাম হোসেনকে হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণের চেষ্টা করেন। তবে উপস্থিত অন্যরা জোবাইদকে আটকে দেন এবং পরে তাকে রুমের বাইরে নিয়ে যান।
ঘটনার পরদিন ১৪ সেপ্টেম্বর ইকরাম হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন এবং ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে অভিযুক্তদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে শাস্তির দাবি জানান।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত জোবাইদ হোসাইন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এসবের কিছুই হয়নি। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ। আমাকে মাসুদ ভাই ডেকেছিলেন, আমি শুধু গিয়েছিলাম।’ ছুরিকাঘাতে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এখন যদি কেউ মিথ্যা অভিযোগ করে, তাহলে তো আমার কিছু করার নেই। আমাদের মধ্যে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা রয়েছে, সেখান থেকেই হয়তো এসব বলা হচ্ছে।’
তবে অভিযুক্ত আরেক নেতা, যুগ্ম আহ্বায়ক ফয়সাল আহমেদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘বিষয়টি এমন নয় যে, তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ছোটা হয়েছে। এটা অতিরঞ্জিত অভিযোগ। ইকরাম ভাই মা-বাবা তুলে গালি দেওয়ায় জোবাইদ উত্তেজিত হয়ে ছুটে গিয়েছিল, কিন্তু আমরা সাথে সাথে তাকে থামিয়ে দিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘যেখানে অনেক শিক্ষার্থী হলে সিট পাচ্ছে না, সেখানে ইকরাম ভাই নিজের জিনিসপত্র রেখে অন্য কাউকে উঠতে দিচ্ছেন না এটাই তো সিট দখলের শামিল।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এ কে এম আবদুল্লাহ আল মাসুদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি প্রথমে ফোন কেটে দেন, পরে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহকারী অধ্যাপক ড. সাদিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা অভিযোগ পেয়েছি এবং উভয় পক্ষকে ডেকেছি। প্রথমে তাদের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করব। যদি তাতেও সমাধান না হয়, তবে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’