আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ১৫ হাজারের বেশি শিশু হত্যার অভিযোগে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীকে শিশুদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী অপরাধীদের একটি বৈশ্বিক কালো তালিকাভুক্ত করেছে জাতিসংঘ।
গাজায় সশস্ত্র সংঘাতে শিশু হত্যার বিষয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের বার্ষিক প্রতিবেদনে ইসরায়েলকে তালিকায় রাখা হয়েছে, যা আগামী শুক্রবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে মহাসচিবের মূখ্যপাত্র স্টিফেন ডুজারিক।
একটি কূটনৈতিক সূত্র বলছে, ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) ছাড়াও ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস এবং ইসলামিক জিহাদকেও তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে।
গাজায় আট মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধের পর এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যেখানে প্রায় ১৫ হাজার শিশুসহ সাড়ে ৩৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ ফ্রান্সেস্কা আলবানিজ, সশস্ত্র সংঘাতে শিশুদের বিরুদ্ধে নিপীড়নকারী দেশগুলোর জাতিসংঘের বার্ষিক কালো তালিকাতে ইসরায়েলকে যুক্ত করাকে স্বাগত জানিয়েছেন।
স্যোশাল মিডিয়া প্লাটফর্ম এক্সে আলবেনিজ বলেন, শিশুদের অধিকার রক্ষা না করার বিষয়টি সত্যিই লজ্জাজনক। গাজায় ১৫ হাজারের শিশুকে হত্যা ও অসংখ্য আহত এবং ২০ হাজার শিশুকে এতিম করা উচিত ছিল না। গাজা যুদ্ধে ইসরায়েল বাহিনী যেভাবে শিশুদের হত্যা করেছে তাতে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসে যে পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছেন তা যথোপযুক্ত।
এদিকে জাতিসংঘে এই পদক্ষেপের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইসরায়েল।
জাতিসংঘে ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত গিলাদ এরদান তার অফিস থেকে একটি ভিডিও বার্তায় জাতিসংঘের সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করে আইডিএফকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে নৈতিক সেনাবাহিনী’ বলে অভিহিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘একমাত্র যিনি আজ কালো তালিকাভুক্ত হয়েছেন তিনি হলেন মহাসচিব, যার সিদ্ধান্ত যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এবং তার আগেও, সন্ত্রাসীদের পুরস্কৃত করছে এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য শিশুদের ব্যবহার করতে উৎসাহিত করছে… তার জন্য লজ্জাজনক!’
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এদিন ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্ত দিয়ে ইসরায়েলে প্রবেশ করে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস যোদ্ধারা। পাশাপাশি ইসরায়েল থেকে প্রায় ২৪০ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় নিয়ে যায় হামাস। তারপর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমানবাহিনী। পরে ২৮ অক্টোবর থেকে অভিযানে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও। চার মাসের বেশি সময় ধরে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ৩৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৭০ শতাংশেরও বেশি নারী ও শিশু। এছাড়া আহত হয়েছেন ৮২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। সূত্র: আলজাজিরা, সিএনএন।