সমাচার ডেস্ক
জাতীয় সংসদে আজ বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বিকালে আগামী অর্থবছরের (২০২৪-২৫) জন্য সাত লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। ৫৩তম এই বাজেটে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার থাকছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে। সঙ্গে থাকছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পরিস্থিতির উন্নয়ন ও রাজস্ব আয় বাড়ানোর চ্যালেঞ্জ। এই বাজেটে শুল্ক-করারোপ কমানো হতে পারে বেশকিছু পণ্য ও সেবায়। এতে করে কিছু পণ্যের দাম কমতে পারে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) দায়িত্বশীল সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
গুঁড়া দুধ, দেশে তৈরি মোটরসাইকেল, ল্যাপটপ, পলিপ্রোপাইলিন ইয়ার্ন, লোহাজাতীয় পণ্য, ইলেকট্রিক মোটর, সুইচ-সকেট, ডায়ালাইসিস ফিল্টার, স্পাইনাল সিরিঞ্জ ও ডেঙ্গু কিটসহ অনেক পণ্যের দাম কমতে পারে।
জানা গেছে, নতুন বাজেটে ডায়ালাইসিসের জন্য ব্যবহৃত উপকরণ ডায়লেসিস ফিল্টারের দাম কমতে পারে। সেহেতু খরচ কমতে পারে ডায়ালাইসিসে। এছাড়া ডেঙ্গু পরীক্ষার কিটের দাম কমতে পারে। কমতে পারে গুঁড়ো দুধ ও চকলেটের দাম। ল্যাপটপ আমদানিতে ভ্যাট প্রত্যাহার করা হচ্ছে। এতে সবমিলিয়ে পণ্যটিতে ৩১ শতাংশের পরিবর্তে ২০ দশমিক ৫০ শুল্ক-কর দিতে হবে। ফলে কমতে পারে ল্যাপটপের দাম।
এয়ারক্রাফটের ইঞ্জিন ও প্রপেলার আমদানি পর্যায়ে কমতে পারে মূসক। ফলে উড়োজাহাজ রক্ষণাবেক্ষণে কমতে পারে খরচ। দেশে তৈরি মোটরসাইকেলের সিকেডি ইঞ্জিনের পার্টসের আমদানি শুল্ক কমছে। এতে দেশে তৈরি মোটরসাইকেলের দাম কমতে পারে।
বিশাল অঙ্কের প্রস্তাবিত এ বাজেট বাস্তবায়নের জন্য মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে রাজস্ব বোর্ডের লক্ষ্য ধরা হয়েছে চার লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। এনবিআর বহির্ভূত খাত থেকে আসবে আরো ১৫ হাজার কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেট বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি এডিপির আকার ধরা হয়েছে দুই লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে সংশোধিত বাজেটে এডিপির আকার করা হয় দুই লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা।
আগামী অর্থবছরে ভর্তুকিতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে ভর্তুকি ও প্রণোদনা খাতে বরাদ্দ ছিলো এক লাখ ১০ হাজার ৬৭২ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭ শতাংশের বেশি ছিলো। কিন্তু, আগামী অর্থবছরের ধরা হয়েছে ৬.৭৫ শতাংশ।
আগামী অর্থবছর নিত্যপণ্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা এবং জীবনযাত্রার মান যেন সীমার মধ্যে থাকে, সেটি নিশ্চিত করতে চান অর্থমন্ত্রী। এ জন্য মূল্যস্ফীতির লক্ষ্য ধরা হচ্ছে সাড়ে ৬ শতাংশ। ঘাটতি মেটাতে ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা দেশি-বিদেশি উৎস থেকে ঋণ গ্রহণের পরিকল্পনা থাকছে। যা জিডিপির ৪.৬ শতাংশ।
আগামী অর্থবছরে সর্বোচ্চ ব্যয় হবে সুদ পরিশোধে এক লাখ ২৯ হাজার কোটি টাকা, ভর্তুকি এক লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা এবং সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন ও পেনশন এক লাখ কোটি টাকা।