গাইবান্ধায় রাতের আঁধারে দুর্বৃত্তদের আগুনে দুর্গাপূজার কয়েকটি প্রতিমা ছাই

- আপডেট সময় : ১০:৩৭:৪৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ৪ বার পড়া হয়েছে
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলায় দুর্গাপূজা উপলক্ষে তৈরি করা প্রতিমায় আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশসহ প্রতিমা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম পুড়ে গেছে। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত একটার দিকে উপজেলার কামারপাড়া হামিন্দপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এর আগেই প্রতিমাগুলো সম্পূর্ণ পুড়ে যায়।
এলাকাবাসী জানায়, দীর্ঘদিন ধরে সাদুল্লাপুর উপজেলার হামিন্দপুর সর্বজনীন দুর্গামন্দিরের কমিটি নিয়ে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এর জের ধরে গত শনিবার দুপুরে একটি পক্ষ মন্দিরের প্রধান দরজায় তালা ঝুলিয়ে দেয়। অপর পক্ষ মন্দিরের দক্ষিণ পাশে খোলা আকাশের নিচে পূজার প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু করে। কয়েক দিনে বাঁশ ও খড় দিয়ে দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশসহ প্রতিমার নানা সরঞ্জাম তৈরি করা হয়। এর মধ্যে সোমবার রাতের আঁধারে দুর্বৃত্তরা প্রতিমাগুলোয় আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশসহ প্রতিমা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম পুড়ে যায়।
সাদুল্লাপুর থানার ওসি তাজউদ্দীন খন্দকার ও সাদুল্লাপুর উপজেলা পূজা উদ্যাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রভাত চন্দ্র অধিকারী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। প্রভাত চন্দ্র অধিকারী বলেন, এই মন্দির নিয়ে বিরোধের বিষয়টি এর আগেও থানায় বসে সমাধান করা হয়েছে। তারপরও দ্বন্দ্ব চলছিল। বিষয়টি সমাধানের জন্য সম্প্রতি উভয় পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করার কথা ছিল। তার আগেই প্রতিমায় আগুন দেওয়া হয়েছে। দ্রুতই উভয়কে নিয়ে বসে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হবে।
সাদুল্লাপুর থানার ওসি বলেন, রাতের আঁধারে প্রতিমায় দুর্বৃত্তদের আগুন দেওয়ার বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। দুর্বৃত্তদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া বিরোধ সমাধানে উভয় পক্ষকে থানায় ডাকা হয়েছে।
হামিন্দপুর সর্বজনীন দুর্গামন্দির কমিটির সাবেক সভাপতি অনুকুল চন্দ্র বলেন, মন্দির নিয়ে বিরোধের কারণে ৮ থেকে ১০টি পরিবার মন্দিরের পাশে ছাপড়া তুলে পূজার আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিমা তৈরির কাজ চলছিল। কিন্তু সেই প্রতিমায় আগুন দেওয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে এই ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।
মন্দির কমিটির বর্তমান সভাপতি কুন্তূল চন্দ্র দাস জানান, দ্বন্দ্বের কারণে মন্দির কমিটির বর্তমান ক্যাশিয়ার কার্তিক চন্দ্র সরকারের ঘরে প্রতিমা তৈরি করা হচ্ছে। কিন্তু অপর পক্ষ খোলা জায়গায় দুর্গাপ্রতিমা তৈরির কাজ শুরু করেন। রাতের আঁধারে কে বা কারা এই আগুন দিয়েছে, তা এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না।