গৌরনদী টিটিসিতে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের পাহাড় ও স্যারের মেয়েদের কু-প্রস্তাব
- আপডেট সময় : ০৭:৫৭:৫৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২৪ বার পড়া হয়েছে
বরিশালের গৌরনদী উপজেলার ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কসংলগ্ন আল্লাহর মসজিদ কসবা এলাকায় অবস্থিত গৌরনদী কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) প্রধানের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। প্রতিষ্ঠানের এক সহকারী প্রশিক্ষকের বিরুদ্ধে নারী প্রশিক্ষণার্থীদের কু-প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগও পাওয়া গেছে। প্রশিক্ষণার্থীদের অভিযোগ, টিটিসির এক স্যার তার নিজস্ব দোকান থেকে ছবি বা প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট প্রিন্ট না করালে তা নানা অজুহাতে গ্রহণ করেন না, বরং সেগুলো ছিঁড়ে ফেলা হয়।
গৌরনদী পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ২২ বছর বয়সী টিটিসির ৪র্থ ব্যাচের শিক্ষার্থী আবদুল রাজ্জাক অভিযোগ করে বলেন, শিল্প কারখানা পরিদর্শনের জন্য প্রতিটি বিভাগে ৭ হাজার টাকা সরকারি অনুদান আসে। সেই অর্থ দিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের পরিদর্শনে নিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও তা না করে টিটিসির প্রধান অধ্যক্ষ আরিফিন চৌধুরী নিজেই আত্মসাৎ করেন।
এছাড়া টিটিসির আরএসি ট্রেডের ৫ম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. সিফাত হোসেন সাগর অভিযোগ করে বলেন, সরকারি অনুদান ৭ হাজার টাকা শিক্ষার্থীদের জন্য এলেও ২৪ জন শিক্ষার্থীর হাতে মাত্র ৫ শত টাকা তুলে দেওয়া হয়। বাকি সাড়ে ৬ হাজার টাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তার প্রতি ক্ষিপ্ত হন প্রতিষ্ঠানের।
একই ব্যাচের নারী শিক্ষার্থী প্রিয়া অভিযোগ করে বলেন, বিভিন্ন সময়ে স্যার আমাদের কু-প্রস্তাব দিতেন। আরেক ছাত্রী মিম অভিযোগ করে বলেন, আবদুর রহমান (সোহান) স্যার ভালো ফলাফল পেতে হলে তার সাথে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলেন। না গেলে ফেল করিয়ে দেওয়ার হুমকিও দেন। আমাদের কাছে এর প্রমাণ আছে।
টিটিসির ৬ষ্ঠ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. হাসান হাওলাদার জানান, আমাদের ক্লাসে দুইজন শিক্ষক রয়েছেন। একজন হলেন আবদুর রহমান (সোহান)। তিনি যা পড়ান তার বেশির ভাগই ভুল শেখান। এর আগেও চারজন ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। একজন শিক্ষক কখনো রক্ষক হয়ে ভক্ষক হতে পারে না।
৫ম ব্যাচের সিভিল বিভাগের শিক্ষার্থী শামীম অভিযোগ করে বলেন, আমি যেহেতু গৌরনদীর ছেলে তাই বেশি সময় বাসস্ট্যান্ডে থাকি। আমাদের টিটিসি স্যার বিভিন্ন সময়ে ছাত্রীদের নিয়ে ঘোরাঘুরি করেন। এছাড়া বিদেশগামীদের কাছ থেকেও প্রশিক্ষণের নামে বিভিন্ন অজুহাতে টাকা আদায় করা হয়। এমনকি প্রতিষ্ঠানটির ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী মো. আল আমিনের মাধ্যমেই বিদেশগামীদের প্রশিক্ষণ করানো হয়। অথচ শিক্ষকরা নানা অজুহাতে বাইরে ঘুরে বেড়ান।
কু-প্রস্তাব ও যৌন হয়রানি প্রসঙ্গে টিটিসির সহকারী শিক্ষক আবদুর রহমান (সোহান) বলেন, আমি কাউকে কোনো কু-প্রস্তাব দিইনি। যদি দিয়ে থাকি তবে প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক আছেন, ছাত্রীরা তার কাছে অভিযোগ জানাতে পারতেন।
এ বিষয়ে গৌরনদী কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রধান অধ্যক্ষ আরিফিন চৌধুরীকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, “আসেন সরাসরি কথা বলুন। দূর থেকে বোঝানো যাবে না, কাছে আসলে সব বুঝতে পারবেন।” এছাড়া ছাত্রীদের যৌন হয়রানির মৌখিক অভিযোগ পেয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।