ডাকসু নির্বাচন: দুটি জরিপে এগিয়ে ছাত্রশিবির, নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন অন্যান্য প্যানেলের

- আপডেট সময় : ০৪:৫৯:৪৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ৭ বার পড়া হয়েছে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রকাশিত দুটি জরিপের ফল নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। দুটি ভিন্ন সংগঠন, ‘ন্যারেটিভ’ এবং ‘সোচ্চার’, তাদের জরিপে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলকে এগিয়ে রেখেছে। তবে অন্য ছাত্র সংগঠনগুলো এই জরিপগুলোর নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
জরিপের ফলাফল ও পদ্ধতি
- ন্যারেটিভের জরিপ:
- ন্যারেটিভ গত ৩০ আগস্ট থেকে ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৫২৬ জন শিক্ষার্থীর ওপর এই জরিপ পরিচালনা করে।
- জরিপে ১৪টি হলের শিক্ষার্থীদের মতামত নেওয়া হয়েছে, তবে চারটি হলকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
- ভিপি পদে ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের আবু সাদিক কায়েম ৪২% সমর্থন পেয়েছেন।
- জিএস পদে এস এম ফরহাদ প্রায় ৩২.৫% এবং এজিএস পদে মুহা. মহিউদ্দীন খান প্রায় ৫৩% সমর্থন পেয়েছেন।
- এই জরিপে অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের মতামত নেওয়া হয়নি, যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ ভোটার অনাবাসিক।
- সোচ্চারের জরিপ:
- সোচ্চার গুগল ফরমের মাধ্যমে ১ থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত ৯৯১ জনের ওপর একটি অনলাইন জরিপ পরিচালনা করে।
- এই জরিপটি শুধু ভিপি পদকে কেন্দ্র করে করা হয়েছে।
- ফলাফলে, ছাত্রশিবিরের প্রার্থীর প্রতি ৩২% এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রতি ২২% সমর্থন দেখা গেছে। ছাত্রদলের প্রার্থীর সমর্থন ছিল মাত্র ৭%।
জরিপ নিয়ে বিতর্ক
অন্যান্য প্যানেলের প্রার্থীরা এই জরিপগুলোর নিরপেক্ষতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছেন। ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান মন্তব্য করেন যে, শিবির তাদের নিজস্ব লোক দিয়ে এই জরিপগুলো করিয়ে নিজেদের এগিয়ে রেখেছে। তিনি মনে করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এসব দিয়ে প্রভাবিত হবেন না এবং ব্যালটের মাধ্যমে সঠিক প্রমাণ দেবেন।
বামপন্থী ছাত্রসংগঠন সমর্থিত প্রতিরোধ পর্ষদের ভিপি প্রার্থী শেখ তাসনিম আফরোজ (ইমি) বলেন, অনলাইনে শিবিরের বট আইডি (ভুয়া ফেসবুক আইডি) ছাড়া কিছু দেখা যায় না, কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন।
জরিপ পরিচালনাকারী সংগঠনগুলোর সঙ্গে ছাত্রশিবিরের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগও উঠেছে। জানা গেছে, ‘সোচ্চার’ এর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আনাস বিন মুনির এবার শিবিরের প্যানেল থেকে ডাকসু নির্বাচনে সদস্য পদে প্রার্থী হয়েছেন। ‘ন্যারেটিভ’ আয়োজিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ছাত্রশিবিরের সাবেক ও বর্তমান নেতাদের উপস্থিতি এই বিতর্কের আগুনে ঘি ঢেলেছে।
এদিকে, সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক তৌহিদুল হক বলেন, এই ধরনের জরিপে কিছু অংশকে অন্তর্ভুক্ত করা আর কিছু অংশকে বাদ দেওয়ার কোনো স্পষ্ট যুক্তি নেই। তিনি মনে করেন, নির্বাচনের আগে ভোটারদের প্রভাবিত করার উদ্দেশ্যেই এই ধরনের রাজনৈতিক জরিপ প্রকাশ করা হয়।
আগামী মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই জরিপগুলো ভোটারদের ওপর কতটা প্রভাব ফেলবে, তা এখন দেখার বিষয়।