সমাচার ডেস্ক
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ৩০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেছেন, ৩০ শতাংশ ভোট কখনোই সন্তোষজনক নয়। একটা বড় দলের নির্বাচন বর্জন ভোটার উপস্থিতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এছাড়া এই ধাপে উল্লেখযোগ্য কোনো সহিংসতা হয়নি। আজ মঙ্গলবার (২১ মে) বিকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে নিজ কার্যালয়ের সামনে ভোটগ্রহণ শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আজ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। সারা দেশে ১৫৬টি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তার মধ্যে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোট হয়েছে ১৩২ উপজেলায় এবং ইভিএম মেশিনে ভোট হয়েছে ২৪ উপজেলায়। নির্বাচনে সহিংসতার তেমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে দু-একটি জায়গায় হাতাহাতি হয়েছে। এসব ঘটনায় এক থেকে দুজন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। কিন্তু নির্বাচনকে ঘিরে উল্লেখযোগ্য সহিংসতা হয়নি। নির্বাচন মোটামুটি ভাল এবং শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ভোটার উপস্থিতির হার ৩০ শতাংশের উপর হতে পারে জানিয়ে সিইসি বলেন, সঠিক এবং নির্ভুল তথ্য আগামীকাল পাবেন। তবে নির্বাচন সুষ্ঠু করতে প্রশাসন খুব তৎপর ছিল। এবার প্রতিটি কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পর্যাপ্ত সদস্য ছিল। এর মধ্যেও কোথাও কোথাও মিডিয়ার কিছু কর্মী আহত হওয়ার খবর আমরা শুনেছি। বিভিন্ন অনিয়মে যখন তারা সাহস করে ছবি তুলতে গিয়েছেন তখন হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে। তবে সঠিক তথ্য এখনো পাইনি। আর বিচ্ছিন্ন হাতাহাতির কারণে ৩৩ জনের মতো আহত হয়েছেন। এর মধ্যে এক থেকে দুইজনের অবস্থা গুরুতর হতে পারে।
তিনি বলেন, গতকাল (সোমবার) রাতে একটি ঘটনায় একজনের হাত কেটেছে। সেটা আমি স্বচক্ষে দেখেছি। সেটা বেশ গুরুতর আঘাত। তবে আজ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী খুব তৎপর ছিল। যেখানে অনিয়ম বা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে সেখানে তারা ব্যবস্থা নিয়েছেন। এ পর্যন্ত মোট আটক করা হয়েছে ২৫ জনকে। অন্যায়ভাবে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টার কারণে ১০ জনকে তাৎক্ষণিকভাবে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
ভোটকেন্দ্রে একজন সাধারণ ভোটার এবং একজন আনসার সদস্য মৃত্যুবরণ করেছেন উল্লেখ করে সিইসি বলেন, দুইজন নিহত হয়েছেন। তবে সেটি ভোটকেন্দ্রের সহিংসতাকে কেন্দ্র করে নয়। আমরা তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।
সিইসি বলেন, দ্বিতীয় ধাপের ১৫৬ উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে তিন পদে এক হাজার ৮২৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তার মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৬০৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬৯৩ জন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫৯৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
আজ সকাল ৮টায় শুরু হওয়া ভোট চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। দ্বিতীয় ধাপে ১৫৬ উপজেলায় ভোটগ্রহণ শেষে এখন চলছে ভোট গণনা। সকালে কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কম থাকলেও পরে কিছুটা বাড়ে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে জোরদার করা হয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
১৫৬টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ শেষে চলছে গণনা। পছন্দের প্রার্থীকে বেছে নিতে সকাল থেকেই ভোটারদের লাইন দেখা যায়। সকালে কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে ভোটার উপস্থিতি।
২৪টি উপজেলায় ইভিএমে এবং বাকিগুলোতে ভোট হয় ব্যালট পেপারে। দয়েক জেলায় বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া মোটামুটি নির্বিঘ্নেই ভোট দেন ভোটাররা। ভোটের পরিবেশ নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই প্রার্থীদেরও। নিবিঘ্ন ও শান্তিপূর্ণ ভোটের সব ব্যবস্থা আগে থেকেই নেয় নির্বাচন কমিশন। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে, প্রতিটি কেন্দ্রে জোরদার করা হয় নিরাপত্তা। ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে মোট ভোটার তিন কোটি ৫২ লাখের বেশি।
এর আগে গত ৮ মে অনুষ্ঠিত ‘ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ১৩৯ উপজেলা নির্বাচনে শতকরা ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ভোট পড়েছিলো বলে জানিয়েছিলো নির্বাচন কমিশন।
ওই সময় সিইসি জানায়, দুটি ভোটকেন্দ্র ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয় । নির্বাচনে ৩৪ ঘটনায় ২৫ জন আহত হয়। ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ভোট কাস্টিং হতে পারে। ভোটার আরো হলে ভাল হতো।