নন-বাসমতী চাল রপ্তানিতে ভারতের নতুন শর্ত, বিপাকে বাংলাদেশি আমদানিকারকরা
- আপডেট সময় : ০৭:১১:০৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২৫ বার পড়া হয়েছে
ভারত বাসমতী ছাড়া অন্য সব ধরনের চাল রপ্তানিতে নতুন শর্ত আরোপ করেছে। এখন থেকে নন-বাসমতী চাল রপ্তানি করতে হলে কৃষি ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য রপ্তানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এপিইডিএ) নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
গতকাল ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য দপ্তর (ডিজিএফটি) এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এপিইডিএ-তে নিবন্ধিত চুক্তি ছাড়া কোনোভাবেই নন-বাসমতী চাল রপ্তানি করা যাবে না।
বাংলাদেশের জন্য কী অর্থ বহন করছে
বাংলাদেশ ভারত থেকে নন-বাসমতী চালের অন্যতম বড় আমদানিকারক। গত অর্থবছরে বাংলাদেশ সরকার ৬ লাখ টন চাল আমদানির অনুমোদন দেয়, যার বেশির ভাগই এসেছে ভারত থেকে। নতুন শর্তে এ প্রক্রিয়ায় জটিলতা তৈরি হতে পারে এবং অশুল্ক বাধার শঙ্কা রয়েছে। যদিও বাংলাদেশ পাকিস্তান ও ভিয়েতনাম থেকেও কিছু চাল আমদানি করে থাকে, তবে ভারতের ওপর নির্ভরশীলতাই বেশি।
ভারতের গুদামে রেকর্ড মজুত
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ভারতের সরকারি গুদামে চালের মজুত গত বছরের তুলনায় ১৪ শতাংশ বেড়ে ইতিহাসের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। একই সময়ে গমের মজুতও গত চার বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ হয়েছে।
বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্যে সাম্প্রতিক টানাপোড়েন
চালের পাশাপাশি অন্যান্য পণ্য নিয়েও বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্যে সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক বিধিনিষেধ আরোপ করেছে দিল্লি। বাংলাদেশ থেকে প্রক্রিয়াজাত খাদ্য ও প্লাস্টিকজাত পণ্য পূর্বাঞ্চলীয় স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া কাঁচা পাট, সুতা, লিনেন কাপড়সহ নয় ধরনের পণ্য স্থলপথে আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে সমুদ্রপথে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ভারতের রপ্তানি প্রভাব ও বৈশ্বিক বাজার
ভারত বিশ্বে সবচেয়ে বড় চাল রপ্তানিকারক দেশ। ইকোনমিক টাইমসের তথ্যানুসারে, চলতি অর্থবছরের এপ্রিল-আগস্ট সময়ে দেশটি ৪৭০ কোটি ডলারের চাল রপ্তানি করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৬ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি। বর্তমানে বৈশ্বিক বাজারে মোট চাল রপ্তানির প্রায় ৪০ শতাংশই ভারতের দখলে।
২০২৩ সালে দেশটির অভ্যন্তরীণ বাজারে সরবরাহ নিশ্চিত করতে চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল ভারত। তবে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর বাজারে দাম কমতে শুরু করে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্যানুসারে, এ বছর বিশ্ববাজারে চালের দাম ১৩ শতাংশ কমেছে, যা আট বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
কিন্তু ভারতের নতুন শর্ত বিশ্ববাজারে আবারও অস্থিরতা তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।