আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২০ বছর ক্ষমতায় থাকার পর আজ বুধবার (১৫ মে) রাতে আনুষ্ঠানিকভাবে উপ-প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী লরেন্স ওয়ংয়ের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে যাচ্ছেন সিঙ্গাপুরের দীর্ঘমেয়াদী প্রধানমন্ত্রী লি সিয়েন লুং। তিনি শাসক দল পিপলস অ্যাকশন পার্টির (পিএপি) মহাসচিব ছিলেন। খবর বিবিসির।
সিঙ্গাপুরের স্বাধীনতার পর থেকেই লি পরিবার দ্বীপরাষ্ট্রটির ক্ষমতায় ছিলো আর লি সিয়েন লুংয়ের পদত্যাগের মধ্য দিয়ে ৫৯ বছরের রাজনৈতিক যুগের সমাপ্তি ঘটছে। ১৯৬৫ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকে সিঙ্গাপুরে মাত্র তিনজন প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় ছিলেন এবং এই তিনজনই ছিলেন ক্ষমতাসীন পিপলস অ্যাকশন পার্টির সদস্য।
লি সিয়েন লুংয়ের বাবা লি কুয়ান ইউ যাকে আধুনিক সিঙ্গাপুরের প্রতিষ্ঠাতা বলা হয়, তিনি এর আগে ২৫ বছর দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যদিও মন্ত্রিসভার একজন জ্যেষ্ঠ সদস্য হিসেবে তিনি থাকবেন তবে এর মাধ্যমে সিঙ্গাপুরের ক্ষমতার পট পরিবর্তন ঘটবে।
গত সপ্তাহে স্থানীয় গণমাধ্যমের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে লি সিয়েন লুং সিঙ্গাপুরের অধিবাসীদের তার পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘আমি অন্য সবার মতো আরো জোরে দৌড়ানোর চেষ্ট করিনি, তারচেয়ে আমি সবার সঙ্গে থেকে দৌড়ানোর চেষ্টা করেছি। এবং আমি মনে করি একাজে আমরা অনেকটা সফল হতে পেরেছি।’
লি সিয়েন লুং বলেন, আমার বাবা এবং পূর্বসূরি গোহ চোক তংয়ের পথ অনুসরণ না করে নিজের মতো করে সব কাজ করার চেষ্টা করেছি।
লি সিয়েন লুং ১৯৮৪ সালে তাঁর বাবা ক্ষমতায় থাকাকালীন একজন কর্মী হিসেবে রাজনীতিতে যোগ দেন। ২০০৪ সালে দায়িত্ব গ্রহণের আগে সিঙ্গাপুরের দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী গো চক তংয়ের অধীনে তিনি মন্ত্রিসভার সফল সদস্য হিসেবে পরিচিতি পান।
লি সিয়েন লুংয়ের শাসনামলে সিঙ্গাপুরের বহুমুখী অর্থনীতি বিকশিত হয় এবং দেশটি আন্তর্জাতিক আর্থিক পাওয়ার হাউস হিসেবে ও পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে পরিচিতি পায়। গত ২০ বছরে দেশটির জনগণের মাথাপিছু আয় ও জিডিপি দ্বিগুণ হয়েছে। কোভিড অতিমারি এবং অতিমারি পরবর্তী আন্তর্জাতিক আর্থিক ধস মোকিাবিলায় তিনি যথেষ্ট মুন্সিয়ানার পরিচয় দেন।
লি সিয়েন লুংয়ের ক্ষমতাকালীন সময়ে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও অন্যন্যা ক্ষমতাধর রাষ্ট্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার পাশাপাশি যুগান্তকারী কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। তিনি সিঙ্গাপুরের অভিবাসন সংক্রান্ত কঠোর নিয়মকানুন, নতুন আবাসন প্রকল্প এবং বর্ণবাদ বিরোধী আইনের প্রস্তাবনা সংসদে পাস করার মাধ্যমে সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করেন।