ঢাকা ০৪:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
আগামী ২১ ডিসেম্বর শুরু হবে জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা ভালো থাকুক প্রিয় বাংলাদেশ, বললেন এমপি ব্যারিস্টার সুমন দিনাজপুরে সাপের কামড়ে পৃথক ঘটনায় তিন গৃহবধূর করুণ মৃত্যু পঞ্চগড়ে সাপের কামড়ে আহত নারী, জ্যান্ত গোখরা নিয়ে হাসপাতালে শিক্ষার্থীদের অবরোধ,সাতরাস্তায় যান চলাচল বন্ধ বরগুনায় পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীদের আলোর মুখ দেখাচ্ছে ‘আরএসডিও’ শেরপুরে মাদক আসামি ধরতে গিয়ে পুলিশের ওপর হামলা, এএসআইসহ আহত ৩ বিএনপির চিন্তা নির্বাচনের নানামুখী প্রচারণা নিয়ে জনগণের কাছে যাওয়া। হানিয়া আমিরের বাংলাদেশ সফর নিশ্চিত — আগমন এখনও সম্পন্ন হয়নি আবাসিক হলের সিট দখল নিয়ে ছাত্রদলের সংঘর্ষ,হত্যাচেষ্টার অভিযোগ

বিএনপির চিন্তা নির্বাচনের নানামুখী প্রচারণা নিয়ে জনগণের কাছে যাওয়া।

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৫:৩৯:৩০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ৮ বার পড়া হয়েছে
আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নির্বাচনমুখী কর্মসূচি নিয়ে জনগণের দ্বারে দ্বারে যাওয়ার চিন্তা করছে বিএনপি। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী নির্বাচন উৎসবমুখর করা এবং জামায়াতসহ ইসলামি ঘরানার কয়েকটি রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি দেওয়ার পরপরই নতুন কর্মসূচি নিতে যাচ্ছে দলটি। গত সোমবার রাতে রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বিএনপি স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই আলোচনা হয়েছে বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে।

এ প্রসঙ্গে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ গতকাল মঙ্গলবার গণমাধ্যমকে বলেন, প্রত্যেক রাজনৈতিক দলেরই কর্মসূচি ঘোষণা করার অধিকার আছে। তারা যদি রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে কর্মসূচি দেয়, তাদের মাঠের রাজনৈতিক বক্তব্যের জবাব বিএনপি মাঠের বক্তব্যের মাধ্যমেই দেবে।

জামায়াতসহ কয়েকটি ইসলামি ঘরানার রাজনৈতিক দল আগামী জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতি চালুসহ কয়েকটি অভিন্ন দাবিতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে মাঠে নামার যে ঘোষণা দিয়েছে, তা নিয়ে বিএনপি স্থায়ী কমিটির বৈঠকে পর্যালোচনা করা হয়েছে। দলটি মনে করে, রাজনৈতিক দলগুলোর এমন ঘোষণা অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগের কৌশল।

বিএনপির নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আগামী নির্বাচনকে উৎসবমুখর ও ইতিহাসের সেরা নির্বাচন হিসেবে দেখতে চায়। এ লক্ষ্যে সরকারকে করা সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে দলটি। এর অংশ হিসেবে বিএনপি এখন নির্বাচনমুখী কর্মসূচি নিতে যাচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে দেশে নির্বাচনি ঢেউ তুলতে চায় দলটি। আর এ কাজে পুরুষের পাশাপাশি ব্যাপক পরিসরে দলের মহিলা নেতাকর্মীদেরও সম্পৃক্ত করা হবে।

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সূত্র বলেছে, আগামী ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন প্রয়োজন। নির্বাচন বিলম্বিত হলে জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগও পিছিয়ে যাবে। যে ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য তারা দীর্ঘ ১৬-১৭ বছর লড়াই-সংগ্রাম করেছেÑ বিএনপির পক্ষ থেকে এ বিষয়গুলো মানুষের কাছে তুলে ধরা হবে।

জানা গেছে, বৈঠকে দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে জনগণকে কীভাবে নির্বাচনমুখী করা যায়, সে ব্যাপারে বিএনপি নেতারা আলোচনা করেন। তারা বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠানে আর পাঁচ মাসের মতো বাকি রয়েছে। এ অবস্থায় দলকে পুরো নির্বাচনমুখী করতে হবে, প্রস্তুত করতে হবে। এ লক্ষ্যে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচনি ইশতেহার প্রণয়নের কাজ সম্পন্ন করতে চায় দলটি। ৩১ দফার আলোকে এই ইশতেহার প্রণয়ন নিয়ে কাজ করছেন সংশ্লিষ্টরা।

স্থায়ী কমিটির বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে জনগণের পাশে আরো বেশি করে কীভাবে থাকা যায়Ñসেটা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের ইতোমধ্যে জনগণের পাশে থেকে তাদের কল্যাণে কাজ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের কিছু নেতাকর্মীর অনৈতিক-অপকর্মের কারণে দলটির ইমেজ কিছুটা ক্ষণ্ণ হয়েছে। এ ব্যাপারে দল তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে আইনি পদক্ষেপও নিয়েছে।

বিএনপি এখন মনে করছে, এই সাংগঠনিক ব্যবস্থার ফলে সারা দেশে সংগঠনে একটা শৃঙ্খলা এসেছে। বিচ্ছিন্ন দু-একটি ঘটনা ছাড়া বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মাধ্যমে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন না। তারা সবাই জনগণের পাশে থাকার দলীয় নির্দেশনা মেনে চলছেন। বিএনপি আগামীতে রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আনতে চায়; এ ব্যাপারে দলটির কমিটমেন্ট আছে। জনগণ সেটা যাতে বোঝে, জনগণের সামনে দৃশ্যমান হয়Ñবিএনপি সে ধরনের কাজই আগামীতে অব্যাহত রাখবে।

বৈঠকে জুলাই জাতীয় সনদ নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে সর্বশেষ অনুষ্ঠিত আলোচনার বিষয়াবলি স্থায়ী কমিটিকে অবহিত করেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে দলীয় যে অবস্থান ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে তুলে ধরা হয়, সেটা স্থায়ী কমিটিকে জানান তিনি। সংবিধান সংশোধনের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়Ñরাজনৈতিক ঐকমত্য হওয়া এমন সংস্কার প্রস্তাবনাগুলো নির্বাচনের আগেই বাস্তবায়ন করার পক্ষে বিএনপি। সেটা নির্বাহী আদেশ বা অধ্যাদেশের মাধ্যমেও হতে পারে। আর সংবিধানের সঙ্গে সম্পর্কিত সংস্কার প্রস্তাবনাগুলো নির্বাচিত পরবর্তী সংসদ করবে।

বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

বিএনপির চিন্তা নির্বাচনের নানামুখী প্রচারণা নিয়ে জনগণের কাছে যাওয়া।

আপডেট সময় : ০৫:৩৯:৩০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নির্বাচনমুখী কর্মসূচি নিয়ে জনগণের দ্বারে দ্বারে যাওয়ার চিন্তা করছে বিএনপি। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী নির্বাচন উৎসবমুখর করা এবং জামায়াতসহ ইসলামি ঘরানার কয়েকটি রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি দেওয়ার পরপরই নতুন কর্মসূচি নিতে যাচ্ছে দলটি। গত সোমবার রাতে রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বিএনপি স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই আলোচনা হয়েছে বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে।

এ প্রসঙ্গে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ গতকাল মঙ্গলবার গণমাধ্যমকে বলেন, প্রত্যেক রাজনৈতিক দলেরই কর্মসূচি ঘোষণা করার অধিকার আছে। তারা যদি রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে কর্মসূচি দেয়, তাদের মাঠের রাজনৈতিক বক্তব্যের জবাব বিএনপি মাঠের বক্তব্যের মাধ্যমেই দেবে।

জামায়াতসহ কয়েকটি ইসলামি ঘরানার রাজনৈতিক দল আগামী জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতি চালুসহ কয়েকটি অভিন্ন দাবিতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে মাঠে নামার যে ঘোষণা দিয়েছে, তা নিয়ে বিএনপি স্থায়ী কমিটির বৈঠকে পর্যালোচনা করা হয়েছে। দলটি মনে করে, রাজনৈতিক দলগুলোর এমন ঘোষণা অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগের কৌশল।

বিএনপির নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আগামী নির্বাচনকে উৎসবমুখর ও ইতিহাসের সেরা নির্বাচন হিসেবে দেখতে চায়। এ লক্ষ্যে সরকারকে করা সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে দলটি। এর অংশ হিসেবে বিএনপি এখন নির্বাচনমুখী কর্মসূচি নিতে যাচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে দেশে নির্বাচনি ঢেউ তুলতে চায় দলটি। আর এ কাজে পুরুষের পাশাপাশি ব্যাপক পরিসরে দলের মহিলা নেতাকর্মীদেরও সম্পৃক্ত করা হবে।

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সূত্র বলেছে, আগামী ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন প্রয়োজন। নির্বাচন বিলম্বিত হলে জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগও পিছিয়ে যাবে। যে ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য তারা দীর্ঘ ১৬-১৭ বছর লড়াই-সংগ্রাম করেছেÑ বিএনপির পক্ষ থেকে এ বিষয়গুলো মানুষের কাছে তুলে ধরা হবে।

জানা গেছে, বৈঠকে দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে জনগণকে কীভাবে নির্বাচনমুখী করা যায়, সে ব্যাপারে বিএনপি নেতারা আলোচনা করেন। তারা বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠানে আর পাঁচ মাসের মতো বাকি রয়েছে। এ অবস্থায় দলকে পুরো নির্বাচনমুখী করতে হবে, প্রস্তুত করতে হবে। এ লক্ষ্যে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচনি ইশতেহার প্রণয়নের কাজ সম্পন্ন করতে চায় দলটি। ৩১ দফার আলোকে এই ইশতেহার প্রণয়ন নিয়ে কাজ করছেন সংশ্লিষ্টরা।

স্থায়ী কমিটির বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে জনগণের পাশে আরো বেশি করে কীভাবে থাকা যায়Ñসেটা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের ইতোমধ্যে জনগণের পাশে থেকে তাদের কল্যাণে কাজ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের কিছু নেতাকর্মীর অনৈতিক-অপকর্মের কারণে দলটির ইমেজ কিছুটা ক্ষণ্ণ হয়েছে। এ ব্যাপারে দল তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে আইনি পদক্ষেপও নিয়েছে।

বিএনপি এখন মনে করছে, এই সাংগঠনিক ব্যবস্থার ফলে সারা দেশে সংগঠনে একটা শৃঙ্খলা এসেছে। বিচ্ছিন্ন দু-একটি ঘটনা ছাড়া বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মাধ্যমে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন না। তারা সবাই জনগণের পাশে থাকার দলীয় নির্দেশনা মেনে চলছেন। বিএনপি আগামীতে রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আনতে চায়; এ ব্যাপারে দলটির কমিটমেন্ট আছে। জনগণ সেটা যাতে বোঝে, জনগণের সামনে দৃশ্যমান হয়Ñবিএনপি সে ধরনের কাজই আগামীতে অব্যাহত রাখবে।

বৈঠকে জুলাই জাতীয় সনদ নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে সর্বশেষ অনুষ্ঠিত আলোচনার বিষয়াবলি স্থায়ী কমিটিকে অবহিত করেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে দলীয় যে অবস্থান ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে তুলে ধরা হয়, সেটা স্থায়ী কমিটিকে জানান তিনি। সংবিধান সংশোধনের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়Ñরাজনৈতিক ঐকমত্য হওয়া এমন সংস্কার প্রস্তাবনাগুলো নির্বাচনের আগেই বাস্তবায়ন করার পক্ষে বিএনপি। সেটা নির্বাহী আদেশ বা অধ্যাদেশের মাধ্যমেও হতে পারে। আর সংবিধানের সঙ্গে সম্পর্কিত সংস্কার প্রস্তাবনাগুলো নির্বাচিত পরবর্তী সংসদ করবে।

বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।