সর্বোচ্চ রান, সর্বোচ্চ উইকেট—পাকিস্তান সিরিজে এই দুই তালিকাতেই দাপট দেখিয়েছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। সর্বোচ্চ উইকেটশিকারির শীর্ষ পাঁচজনের মধ্যে চারজনই বাংলাদেশের, সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহকের তালিকায় পাঁচজনের মধ্যে বাংলাদেশের আছেন তিনজন।
এর ফলই মূলত পাকিস্তানকে তাদের মাটিতে ধবলধোলাই। ভারত সফরেও ব্যাটসম্যান ও বোলারদের কাছ থেকে এমন যৌথ ভূমিকা প্রত্যাশা করছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন।
২ টেস্ট ও ৩ টি-টোয়েন্টির দুটি সিরিজ খেলতে আজ ভারতের উদ্দেশে দেশ ছেড়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। যাওয়ার আগে বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে এমন প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
ভারতে বাংলাদেশ স্পিনাররা পার্থক্য গড়ে দিতে পারেন কি না—এমন প্রশ্নে নাজমুল বলেছেন, ‘শুধু স্পিনারদের যে দায়িত্ব, তা নয়। ব্যবধান তখনই গড়া সম্ভব হবে, যখন দল হিসেবে খেলব। ব্যাটসম্যান ও পেস বোলারদেরও সমান দায়িত্ব আছে। পুরো দল হিসেবে খেলাটা গুরুত্বপূর্ণ, দল হিসেবে খেলতে পারলেই ভালো ক্রিকেট খেলব।’
শক্তির বিচারে পাকিস্তানের চেয়ে অনেক এগিয়ে ভারত। আর ঘরের মাঠে তো তারা অনেকটা অপ্রতিরোধ্য। সর্বশেষ টেস্ট সিরিজেও ইংল্যান্ডকে হারিয়েছে ভারত। আর বাংলাদেশের অতীত অভিজ্ঞতাও খুব একটা ভালো নয়। ২০১৯ সালে ইন্দোর ও কলকাতায় বাংলাদেশকে রীতিমতো নাকানিচুবানি খাইয়েছিল ভারত। বাংলাদেশ সেই সিরিজের দুই টেস্টেই হেরেছিল ইনিংস ব্যবধানে। ভারতের পেসাররা দুই টেস্টে উইকেট নিয়েছিলেন ৩৫টি।
পাকিস্তানকে ধবলধোলাই করার স্বাদ নিয়ে ভারতে রওনা হলেও নাজমুল তাই পা মাটিতে রেখেই কথা বলেছেন, ‘এটা একটা চ্যালেঞ্জিং সিরিজ হতে যাচ্ছে। পাকিস্তানে একটা ভালো সিরিজ পার হওয়ার পর দলের মধ্যে বাড়তি আত্মবিশ্বাস আছে, এমনকি পুরো দেশের মানুষের মধ্যেই আছে। প্রতিটি সিরিজ একটা সুযোগ, আমরা দুটি ম্যাচই জেতার জন্য খেলব। জেতার জন্য যে জিনিসগুলো গুরুত্বপূর্ণ, প্রক্রিয়া গুরুত্বপূর্ণ…আমাদের লক্ষ্য থাকবে কাজটা আমরা ঠিকঠাক করতে পারছি কি না। আমাদের কাজ ঠিকমতো করতে পারলে ভালো ফল সম্ভব, তবে চ্যালেঞ্জিং।’
ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, চেন্নাইয়ে কালো নয়, লাল মাটির উইকেটে খেলতে পারে ভারত। উইকেটে থাকতে পারে পেসারদের জন্য বাড়তি সুবিধা। নাজমুল অবশ্য সেটা নিয়ে ভাবছেন না। তবে অভিজ্ঞতার বিচারে ভারতীয় পেসাররা যে এগিয়ে, সেটা মানছেন নাজমুল, ‘প্রতিপক্ষ দল কী চিন্তা করছে, সেটা আমি বলতে পারব না। তবে আমাদের স্পিন ও পেস বিভাগ ভালো একটা অবস্থানে আছে। তবে ওই দলের সঙ্গে তুলনা করলে অভিজ্ঞতার দিক থেকে আমাদের পেসাররা কিছুটা পিছিয়ে।’
নাজমুল এরপর যোগ করেন, ‘স্কিলের দিক থেকে হয়তো কাছাকাছি আছি, তবে অভিজ্ঞতার দিক থেকে ওই দলটাকে এগিয়েই রাখব। (আমাদের) স্পিনারদের ভালো অভিজ্ঞতা, যেকোনো কন্ডিশনে বোলিং করার সামর্থ্য আছে। এতটুকু বলতে পারি পেসার, স্পিনাররা যারাই খেলবে, প্রত্যেক খেলোয়াড় শতভাগ দেবে। আমি বিশ্বাস করি পাঁচ দিন ভালো ক্রিকেট খেলতে পারলে রোমাঞ্চকর ম্যাচ হবে।’
বাংলাদেশ অধিনায়কের প্রাথমিক লক্ষ্য ম্যাচকে পঞ্চম দিনে নিয়ে যাওয়া। তাহলেই নাকি শেষ সেশনে সুযোগ আসতে পারে বাংলাদেশের জন্য, ‘র্যাঙ্কিংয়েও যদি দেখেন, ওরা আমাদের চেয়ে অনেক এগিয়ে। তবে সম্প্রতি আমরা ভালো একটা সিরিজ পার করে এসেছি। আমাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, পাঁচ দিন কীভাবে ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি, ফলটা শেষ সেশনে গিয়েই হয়। পাঁচ দিন ভালো খেললে শেষ সেশনে সুযোগ থাকে কোন দল জিতবে। গুরুত্বপূর্ণ হলো পাঁচটা দিন কীভাবে ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি, এটার জন্য কী পরিকল্পনা করা দরকার, সেটা।’
নাজমুল এরপর বলেন, ‘এটা একটা সুযোগ। প্রত্যেকে ম্যাচ জেতার জন্য খেলব। সুযোগ থাকবে জেতার। কিন্তু যেটা বললাম, আগে এত লম্বা চিন্তা না করে শক্তি অনুযায়ী যেন ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি পাঁচ দিন। এটা গুরুত্বপূর্ণ।’