ঢাকা ০৬:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫, ১০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
শিক্ষা, স্বাস্থ্যে হযবরল অবস্থা: সংস্কার কমিশনের দাবি সৈয়দ আনোয়ার হোসেন যাত্রাবাড়ী হত্যা মামলা: তৌহিদ আফ্রিদি পাঁচ দিনের রিমান্ডে বার্সেলোনা এখনও নতুন মৌসুমের জার্সি মাঠে ব্যবহার করতে পারছে না রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বৈশ্বিক উদ্যোগের আহ্বান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জীর্ণ ঘরে মৃত্যুর প্রহর গুনছে অসুস্থ দম্পতি, প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের নীরবতা। বিএনপি নেতা ফজলুর রহমানকে গ্রেপ্তারের দাবিতে সেগুনবাগিচায় বিক্ষোভ। যাত্রাবাড়ী হত্যা মামলায় তৌহিদ আফ্রিদির ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন সিআইডির। দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের দাবিতে কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক সম্মেলন ডাকসু নির্বাচনে ভিপি পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাতক্ষীরার শামীম হোসেন। বিএনপির আওয়ামী লীগ বিষয়ক সম্পাদক রুমিন ফারহানা: হাসনাত আবদুল্লাহর অভিযোগ

৭ দফা প্রস্তাব।

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বৈশ্বিক উদ্যোগের আহ্বান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের

নিজস্ব প্রতিবেদক।
  • আপডেট সময় : ০৯:৫১:৫০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫ ৪ বার পড়া হয়েছে

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে কার্যকর বৈশ্বিক উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস একটি ৭ দফা প্রস্তাব পেশ করেছেন।

আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

কক্সবাজারে রোহিঙ্গা বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে কার্যকর বৈশ্বিক উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি এই উদ্দেশ্যে ৭ দফা প্রস্তাব উপস্থাপন করেন।

ড. ইউনূস বলেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর চলমান জাতিগত নির্মূল অভিযান বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সক্রিয় ও একত্রিত পদক্ষেপ প্রয়োজন। তিনি বলেন, “রোহিঙ্গাদের জাতিগত নির্মূল রোধ করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। বাংলাদেশ সীমিত সম্পদ থাকা সত্ত্বেও ২০১৭ সাল থেকে মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে। তবে এই পরিস্থিতি অনির্দিষ্টকাল ধরে রাখা সম্ভব নয়।”

তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান মূলত মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যার সমাধানের মধ্য দিয়ে আসতে হবে। এজন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে শক্তিশালী কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টি করতে হবে, যাতে মিয়ানমার সরকার ও আরাকান আর্মি রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের সুযোগ দেয় এবং বাংলাদেশে নতুন কোনো অনুপ্রবেশ না ঘটে।

ড. ইউনূসের ৭ দফা প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে:

  1. রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য আন্তর্জাতিক তদারকি কাঠামো গঠন।
  2. জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া পরিচালনা
  3. মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী মোতায়েন
  4. রোহিঙ্গাদের নাগরিক অধিকার স্বীকৃতিতে আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধি
  5. রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ সম্প্রসারণ।
  6. বাংলাদেশে নতুন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ রোধে সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার
  7. রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার নিশ্চিত করা।

ড. ইউনূস বলেন, রোহিঙ্গা সংকট কেবল বাংলাদেশ নয়, পুরো অঞ্চলের জন্য নিরাপত্তাজনিত হুমকি, যা মিয়ানমারের রাজনৈতিক ব্যর্থতা ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিষ্ক্রিয়তার ফল। তিনি সতর্ক করেছেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন এই দুর্যোগের বোঝা বহন না করে, এজন্য এখনই উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।

এ সময় ড. ইউনূস দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে বলেন, দেশ বর্তমানে স্থিতিশীল এবং জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রস্তুত। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে প্রস্তুতি চলছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে।

সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক এনজিও প্রতিনিধির পাশাপাশি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। তারা নিজেদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন এবং নিরাপদ প্রত্যাবাসনের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা দাবি করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

৭ দফা প্রস্তাব।

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বৈশ্বিক উদ্যোগের আহ্বান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের

আপডেট সময় : ০৯:৫১:৫০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫

কক্সবাজারে রোহিঙ্গা বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে কার্যকর বৈশ্বিক উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি এই উদ্দেশ্যে ৭ দফা প্রস্তাব উপস্থাপন করেন।

ড. ইউনূস বলেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর চলমান জাতিগত নির্মূল অভিযান বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সক্রিয় ও একত্রিত পদক্ষেপ প্রয়োজন। তিনি বলেন, “রোহিঙ্গাদের জাতিগত নির্মূল রোধ করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। বাংলাদেশ সীমিত সম্পদ থাকা সত্ত্বেও ২০১৭ সাল থেকে মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে। তবে এই পরিস্থিতি অনির্দিষ্টকাল ধরে রাখা সম্ভব নয়।”

তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান মূলত মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যার সমাধানের মধ্য দিয়ে আসতে হবে। এজন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে শক্তিশালী কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টি করতে হবে, যাতে মিয়ানমার সরকার ও আরাকান আর্মি রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের সুযোগ দেয় এবং বাংলাদেশে নতুন কোনো অনুপ্রবেশ না ঘটে।

ড. ইউনূসের ৭ দফা প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে:

  1. রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য আন্তর্জাতিক তদারকি কাঠামো গঠন।
  2. জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া পরিচালনা
  3. মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী মোতায়েন
  4. রোহিঙ্গাদের নাগরিক অধিকার স্বীকৃতিতে আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধি
  5. রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ সম্প্রসারণ।
  6. বাংলাদেশে নতুন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ রোধে সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার
  7. রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার নিশ্চিত করা।

ড. ইউনূস বলেন, রোহিঙ্গা সংকট কেবল বাংলাদেশ নয়, পুরো অঞ্চলের জন্য নিরাপত্তাজনিত হুমকি, যা মিয়ানমারের রাজনৈতিক ব্যর্থতা ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিষ্ক্রিয়তার ফল। তিনি সতর্ক করেছেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন এই দুর্যোগের বোঝা বহন না করে, এজন্য এখনই উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।

এ সময় ড. ইউনূস দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে বলেন, দেশ বর্তমানে স্থিতিশীল এবং জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রস্তুত। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে প্রস্তুতি চলছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে।

সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক এনজিও প্রতিনিধির পাশাপাশি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। তারা নিজেদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন এবং নিরাপদ প্রত্যাবাসনের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা দাবি করেন।