বসন্তে ফুলে যদি মৌমাছি না আসে তবে ফুল অদৃশ্য হবেই
মৌমাছিরা দেরিতে এলে ফুল অদৃশ্য হয়ে যেতে পারে

- আপডেট সময় : ১০:৩৮:৫৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫ ৬০ বার পড়া হয়েছে
সপুষ্পক উদ্ভিদের জীবনধারণের জন্য কোনো পরিদর্শনকারী পোকামাকড় বা পাখির উপস্থিতি না থাকলে ফুল হারিয়ে যেতে পারে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা যায়, ফুল ফোটা ও পরাগরেণুর আগমনের সময় সামান্য বিরতি প্রাকৃতিক অবস্থাকে জটিল করে দিতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের ইস্ট টেনেসি স্টেট ইউনিভার্সিটির জীববিজ্ঞানী লিডসন কার্নেরিওর নেতৃত্বে এই গবেষণা পরিচালনা করা হয়েছে। মৌমাছির মতো ক্ষুদ্র পোকার অনুপস্থিতি যেকোনো ফুলের মৌসুমকে পরিবর্তিত করে দিতে পারে।
বিজ্ঞানীরা একটি তেল উৎপাদনকারী লতার ওপর নজর রাখছেন। আমাজন লতা নামের এই লতা ব্রাজিলের শুষ্ক গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বনের মধ্যে বিকশিত হয়। লতাটি স্বপরাগায়ন করতে পারে না। বিশেষ তেল সংগ্রহকারী মৌমাছির ওপর নির্ভর করে। মৌমাছি পাপড়ি ধরে বাহু দিয়ে পুষ্টিসমৃদ্ধ ফুলের পরাগায়ন করে। পাপড়ির পৃষ্ঠে ছোট ছোট দাগ পরীক্ষা করে বিজ্ঞানী কোন ফুলে কখন মৌমাছি ভ্রমণ করে, তা জানতে পারেন।
পার্নাম্বুকোর পার্ক ন্যাসিওনাল ডো ক্যাটিমবাউতে মাঠপর্যায়ে এই গবেষণা পরিচালনা করা হয়। লতার স্বাভাবিক ফুল ফোটার সময় তথ্য সংগ্রহ করা হয়। প্রথম পরিদর্শনে ১০০টির বেশি ফুল পর্যবেক্ষণ করা হয়। মৌমাছির চলাচল সেই সময় প্রায় অনুপস্থিত ছিল। দ্বিতীয়বার পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, পরাগায়নকারীর কার্যকলাপ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে প্রস্ফুটিত ফুলের ৯৪ শতাংশে স্পষ্টতই দাগের চিহ্ন দেখা যায়। এক মাস পরে মৌমাছির আগমন বাড়লে ছোট ফুল ধারণকারী গাছ বেশি বীজ উৎপাদন করে।
মৌমাছির আগমনের কারণে এমন বৈচিত্র্য দেখা যায়। উষ্ণায়নের ফুল আগে প্রস্ফুটিত হচ্ছে এখন। এতে বীজ গঠন হচ্ছে না। নতুন গবেষণায় বিজ্ঞানীরা দেখছেন, যেসব অঞ্চলে বৃষ্টি, তাপমাত্রা বা দিনের দৈর্ঘ্য কয়েক সপ্তাহ ধরে তীব্রভাবে ওঠানামা করে, সেখানে ফুলের গঠনে পরিবর্তন দেখা যায়। তীব্র খরা, ভারী বৃষ্টি ও উত্তপ্ত তাপপ্রবাহ ফুলের স্বাভাবিক বিকাশকে নষ্ট করে দিচ্ছে। ব্রাজিলের বিভিন্ন লতার ক্ষেত্রে দেখা যায়, বেশির ভাগ মৌমাছি আগমনের আগেই ফুল ফুটছে। ফুল ফুটলেও বীজ তৈরি না করলে সপুষ্পক উদ্ভিদের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে।