ঢাকা ০৯:৫৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৫, ৯ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সৌরজগতের শেষ

সৌরজগতের শেষ সীমানায় কী আছে

নিজস্ব প্রতিবেদক।
  • আপডেট সময় : ০৯:৪৫:৪৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫ ২৭ বার পড়া হয়েছে
আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সৌরজগৎ বলতে আমরা অনেকেই শুধু সূর্য ও তার চারপাশে ঘূর্ণমান আটটি গ্রহের সমষ্টিকে বুঝি। তবে সৌরজগৎ মূলত গ্রহ, উপগ্রহ, বামন গ্রহ, গ্রহাণু, ধূমকেতু ও আন্তগ্রহ ধূলিকণার এক বিশাল পরিবার। সৌরজগতের প্রতিটি অঞ্চলেরই আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে। আর তাই আমাদের সৌরজগতের শেষ সীমানা কোথায় বা সেখানে কী আছে তা জানতে দীর্ঘদিন ধরেই চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা। এবার পৃথিবী থেকে প্রায় ২০০ কোটি কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নাসার মহাকাশযান ‘ভয়েজার’ সৌরজগতের প্রায় শেষ সীমানায় থাকা অদ্ভুত এলাকার সন্ধান দিয়েছে। এলাকাটির তাপমাত্রা ৫০ হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগুনের কোনো উৎস ছাড়াই ভীষণ উত্তপ্ত এলাকাটি। নতুন এই আবিষ্কার পূর্ববর্তী অনেক অনুমানকে চ্যালেঞ্জ করছে। মহাকাশযানটি আন্তনাক্ষত্রিক ও সৌর এলাকার মধ্যে সংযুক্ত চৌম্বকক্ষেত্রও আবিষ্কার করেছে। এই ক্ষেত্র সূর্যের প্রভাব ও ছায়াপথের চুম্বকীয় কাঠামো সম্পর্কে নতুন অনুসন্ধানের সূত্রপাত করেছে।

১৯৭৭ সালে উৎক্ষেপণ করা নাসার ভয়েজার ১ ও ভয়েজার ২ মহাকাশযান সৌরজগতের প্রান্তের বাইরে একটি উচ্চ-তাপমাত্রার অঞ্চল চিহ্নিত করেছে। বিজ্ঞানীরা এখন এই অঞ্চলটি নিয়ে গবেষণা করছেন। অঞ্চলটির নাম দেওয়া হয়েছে আগুনের দেয়াল বা ফায়ারওয়াল। এটি সৌরজগতের সীমানা ও আন্তনাক্ষত্রিক সৌর এলাকার মধ্যে চুম্বকীয় সংযোগ সম্পর্কে একটি নতুন ধারণা দিচ্ছে।

সৌরজগতের শেষ কোথায়, তা নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিতর্ক চলছে। কেউ কেউ নেপচুনের পরে সীমানা শেষ হওয়ার কথা জানালেও অনেকে ওর্ট ক্লাউডের দিকে ইঙ্গিত করেন। দূরবর্তী এই অঞ্চলে অনেক ধূমকেতু রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। নাসা সৌরজগতের এই সীমানার নামকরণ করেছে হেলিওপজ। সেই এলাকায় সূর্য থেকে আসা চার্জযুক্ত কণার একটি প্রবাহ সৌর বায়ু তার শক্তি হারায়। এই বিন্দুর বাইরে আন্তনাক্ষত্রিক মহাকাশ রয়েছে। নাসা সূর্যের প্রভাবে গঠিত বুদ্‌বুদের শেষ প্রান্তের সঙ্গে হেলিওপজ তুলনা করে।

হেলিওপজ অতিক্রম করার পর উভয় ভয়েজার অত্যন্ত উত্তপ্ত অঞ্চলের মুখোমুখি হয়েছে। সেখানে তাপমাত্রা ৩০ হাজার থেকে ৫০ হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ছিল। অতিরিক্ত তাপ সত্ত্বেও ভয়েজার দুটি অক্ষত আছে। নাসা জানিয়েছে, এই আগুনের দেয়াল আসলে আগুন দিয়ে তৈরি নয়। সেখানে অত্যন্ত শক্তিশালী কণা রয়েছে, যা ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে। এসব কণার মধ্যে ভারী শক্তি রয়েছে। এসব কণা আগুনের মতো জ্বলে না। এই উচ্চশক্তির অঞ্চল অতিক্রম করার পর ভয়েজার দুটি আন্তনাক্ষত্রিক স্থান থেকে চৌম্বকক্ষেত্রের তথ্য রেকর্ড করেছে। বিজ্ঞানীদের অনুমান, হেলিওপজের বাইরের চৌম্বকক্ষেত্র সৌরজগতের ক্ষেত্রের সঙ্গে সংযুক্ত। আগে মনে করা হতো, দুটি অঞ্চল সম্পূর্ণ পৃথক।

সূত্র: ইকোনমিক টাইমস

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

সৌরজগতের শেষ

সৌরজগতের শেষ সীমানায় কী আছে

আপডেট সময় : ০৯:৪৫:৪৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫

সৌরজগৎ বলতে আমরা অনেকেই শুধু সূর্য ও তার চারপাশে ঘূর্ণমান আটটি গ্রহের সমষ্টিকে বুঝি। তবে সৌরজগৎ মূলত গ্রহ, উপগ্রহ, বামন গ্রহ, গ্রহাণু, ধূমকেতু ও আন্তগ্রহ ধূলিকণার এক বিশাল পরিবার। সৌরজগতের প্রতিটি অঞ্চলেরই আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে। আর তাই আমাদের সৌরজগতের শেষ সীমানা কোথায় বা সেখানে কী আছে তা জানতে দীর্ঘদিন ধরেই চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা। এবার পৃথিবী থেকে প্রায় ২০০ কোটি কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নাসার মহাকাশযান ‘ভয়েজার’ সৌরজগতের প্রায় শেষ সীমানায় থাকা অদ্ভুত এলাকার সন্ধান দিয়েছে। এলাকাটির তাপমাত্রা ৫০ হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগুনের কোনো উৎস ছাড়াই ভীষণ উত্তপ্ত এলাকাটি। নতুন এই আবিষ্কার পূর্ববর্তী অনেক অনুমানকে চ্যালেঞ্জ করছে। মহাকাশযানটি আন্তনাক্ষত্রিক ও সৌর এলাকার মধ্যে সংযুক্ত চৌম্বকক্ষেত্রও আবিষ্কার করেছে। এই ক্ষেত্র সূর্যের প্রভাব ও ছায়াপথের চুম্বকীয় কাঠামো সম্পর্কে নতুন অনুসন্ধানের সূত্রপাত করেছে।

১৯৭৭ সালে উৎক্ষেপণ করা নাসার ভয়েজার ১ ও ভয়েজার ২ মহাকাশযান সৌরজগতের প্রান্তের বাইরে একটি উচ্চ-তাপমাত্রার অঞ্চল চিহ্নিত করেছে। বিজ্ঞানীরা এখন এই অঞ্চলটি নিয়ে গবেষণা করছেন। অঞ্চলটির নাম দেওয়া হয়েছে আগুনের দেয়াল বা ফায়ারওয়াল। এটি সৌরজগতের সীমানা ও আন্তনাক্ষত্রিক সৌর এলাকার মধ্যে চুম্বকীয় সংযোগ সম্পর্কে একটি নতুন ধারণা দিচ্ছে।

সৌরজগতের শেষ কোথায়, তা নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিতর্ক চলছে। কেউ কেউ নেপচুনের পরে সীমানা শেষ হওয়ার কথা জানালেও অনেকে ওর্ট ক্লাউডের দিকে ইঙ্গিত করেন। দূরবর্তী এই অঞ্চলে অনেক ধূমকেতু রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। নাসা সৌরজগতের এই সীমানার নামকরণ করেছে হেলিওপজ। সেই এলাকায় সূর্য থেকে আসা চার্জযুক্ত কণার একটি প্রবাহ সৌর বায়ু তার শক্তি হারায়। এই বিন্দুর বাইরে আন্তনাক্ষত্রিক মহাকাশ রয়েছে। নাসা সূর্যের প্রভাবে গঠিত বুদ্‌বুদের শেষ প্রান্তের সঙ্গে হেলিওপজ তুলনা করে।

হেলিওপজ অতিক্রম করার পর উভয় ভয়েজার অত্যন্ত উত্তপ্ত অঞ্চলের মুখোমুখি হয়েছে। সেখানে তাপমাত্রা ৩০ হাজার থেকে ৫০ হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ছিল। অতিরিক্ত তাপ সত্ত্বেও ভয়েজার দুটি অক্ষত আছে। নাসা জানিয়েছে, এই আগুনের দেয়াল আসলে আগুন দিয়ে তৈরি নয়। সেখানে অত্যন্ত শক্তিশালী কণা রয়েছে, যা ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে। এসব কণার মধ্যে ভারী শক্তি রয়েছে। এসব কণা আগুনের মতো জ্বলে না। এই উচ্চশক্তির অঞ্চল অতিক্রম করার পর ভয়েজার দুটি আন্তনাক্ষত্রিক স্থান থেকে চৌম্বকক্ষেত্রের তথ্য রেকর্ড করেছে। বিজ্ঞানীদের অনুমান, হেলিওপজের বাইরের চৌম্বকক্ষেত্র সৌরজগতের ক্ষেত্রের সঙ্গে সংযুক্ত। আগে মনে করা হতো, দুটি অঞ্চল সম্পূর্ণ পৃথক।

সূত্র: ইকোনমিক টাইমস