হোয়াটসঅ্যাপ, ই–মেইলে বেশি অভ্যস্ত মানুষ। হয়তো আগামীর শিশুরা ডাকবাক্সের সঙ্গে পরিচিত হবে জাদুঘরে
ই–মেইলের জমানায় কদর নেই ডাকবাক্সের

- আপডেট সময় : ০৬:৪৭:২৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫ ১৭ বার পড়া হয়েছে
বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাকঘরের সামনের এই ডাকবাক্স আর আগের মতো সচল নেই
হলদে খামে ভরা চিঠি, লাল ডাকবাক্স—এখন দেখা যায় না। ডিজিটাল জমানায় ডাকঘরে গিয়ে চিঠি পাঠানো, কিংবা ডাকবাক্সে চিঠি ফেলার দিন ফুরিয়েছে। তার চেয়ে নীল মেসেঞ্জার, সবুজ হোয়াটসঅ্যাপ, নীল টেলিগ্রাম, আর লাল-নীল-সবুজ-হলুদের ই–মেইল বেশি পরিচিত। হয়তো আগামীর শিশুদের সঙ্গে ডাকবাক্সের পরিচয় হবে জাদুঘরে।
পুরান ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীর পাড়ে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউতে অবস্থিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে এখনো টিকে আছে পোস্ট অফিস। একসময় এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকবাক্সে দাপ্তরিক চিঠির পাশাপাশি আসত ব্যক্তিগত চিঠিও। এখন আর আগের মতো চিঠি আসে না। তাই মরিচা পড়ে ডাকবাক্সটি তামাটে রং ধারণ করেছে। আগের মতো আর নেই লাল বাক্সের কদর। সদরঘাট পোস্ট অফিসের সাব–পোস্ট অফিস হিসেবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ডাকঘর পরিচালিত হয়। এর পোস্টাল কোড—১১০০। বর্তমানে ডাকঘরটিতে শুধু চিঠিপত্র গ্রহণের কাজ হয়।
পরিবর্তন এসেছে খামের রংয়ে। আগের মতো এখন আর হলুদ খাম ব্যবহার হয় না। বেশির ভাগই বাদামি রংয়ের খাম। নিজস্ব প্রতিষ্ঠানের নাম ও লোগোসংবলিত স্মারকে এখন চিঠি আদান–প্রদান করা হয়।
ডাকঘর সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আগে কলেজ আমল থেকেই এখানে পোস্ট অফিস ও ডাকবাক্সের প্রচলন ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের (বর্তমান) সামনে আমতলায় পোস্ট অফিসের জন্য একটি রুম বরাদ্দ ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবনগুলো সম্প্রসারিত হওয়ায় পরে ইউটিলিটি ভবনের দ্বিতীয় তলার পশ্চিম পাশে একটি কক্ষে পোস্ট অফিসটি স্থানান্তর করা হয়। এখন সেখানে একজন পোস্টমাস্টার এবং চিঠি বিলি করার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন একজন ডাকপিয়ন। চিঠিপত্রের বেশির ভাগই বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্যাংকিংয়ের দাপ্তরিক কাজের এবং তালাকসংক্রান্ত। মামলা-মোকদ্দমার চিঠি, দাপ্তরিক চিঠি আসত। ব্যক্তিগত চিঠি খুব কম আসে। এ ছাড়া কিছু লোক সরকারি স্ট্যাম্প কিনতে আসেন পোস্ট অফিসে। সকাল নয়টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত দাপ্তরিক কাজকর্ম চলে এখানে।
পোস্ট অফিসের সাব-পোস্টমাস্টার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘বর্তমানে দাপ্তরিক চিঠিপত্র বেশি আসে। মামলা ও তালাকের চিঠিগুলো প্রায়ই ডাকযোগে প্রদান করার কারণে এখানে আসে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় যাবতীয় চিঠি ডাকেই পাঠানো হয়। আমাদের এখন আর আগের মতো কর্মব্যস্ত থাকতে হয় না। প্রতিদিন কত চিঠি আসে এবং কত পাঠানো হয়, তা পোস্ট মেশিনের মাধ্যমে জানা যায়। সবাই এখন মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রামে তথ্য আদান-প্রদান করেন। চিঠি পাঠানোর প্রবণতা একাবারেই কম। আগের দিনের মতো চিঠি লিখে ডাকবাক্সে জমা দেওয়ার সেই চিত্র সচরাচর দেখা যায় না।’
https://shorturl.fm/JgvQT