ঢাকা ০১:৩৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫, ২৬ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
গহীন জঙ্গলে ইউপিডিএফ’র গোপন আস্তানার সন্ধান: অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার হানিফসহ চারজনের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়ার হত্যা মামলার অভিযোগ আমলে নিল ট্রাইব্যুনাল ৭৩ পর্যবেক্ষক সংস্থার অনুমোদন, ঠিকানায় অস্তিত্ব নেই অনেকের! প্রত্যাশিত নির্বাচনে জনগণের পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করলেন তারেক রহমান গৌরনদী ও আগলঝাড়ার বিভিন্ন পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করেন জহির উদ্দিন স্বপন! খুব শিগগিরই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন আমিরাতে নতুন ভিসা নীতি: এআই বিশেষজ্ঞসহ চার ক্যাটাগরি চালু “পিআরের নামে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে জামায়াত” — কায়সার কামাল শারদীয় পূজা ঘিরে গুজব কমেছে, কঠোর নজরদারিতে এনটিএমসি দোহায় হামলার ঘটনায় কাতারের প্রধানমন্ত্রীর কাছে ক্ষমা চাইলেন নেতানিয়াহু

ছাত্রলীগ নেত্রী ঐশী পরীক্ষা না দিয়ে পাস করেছেন।

পরীক্ষা না দিয়েই পাস ছাত্রলীগ নেত্রী,দীর্ঘদিন সময় পার হলেও জমা হয়নি তদন্ত প্রতিবেদন

  • আপডেট সময় : ০৫:৫০:২৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫ ৮০ বার পড়া হয়েছে
সংবাদ সমাচারের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী সুরাইয়া ইয়াসমিন ঐশী পরীক্ষায় অংশ না নিয়েই পাস করেছেন। সেই সময় পরীক্ষা না দিয়ে  ছাত্রলীগ নেত্রীকে পাস করার অভিযোগ শিক্ষকের বিরুদ্ধে,এমন অভিযোগে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় নিউজ হওয়ার পর  সারাদেশে তোলপাড় হয়ে যায়। পরে সত্যতা বের করার জন্য  গঠিত হয় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি ।কিন্তু ৭ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত কোনো প্রতিবেদন জমা পড়েনি। তদন্ত প্রতিবেদন জমা না দেওয়ার কারণ হিসেবে পক্ষপাতী মনোভাবকে দায়ী করেছেন অনেকেই। 

বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায় যে, তদন্ত কমিটির সদস্যরা এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো তদন্তই করেনি।সেখানে রিপোর্ট জমা ত অনেক দূরের বিষয়। কারণ সদস্য সচিব হিসেবে তদন্ত কমিটিতে ছিলেন গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল হান্নান।সেকারণে এখানে পক্ষপাতের সম্ভাবনা আছে বলে অনেকে মনে করতেছেন।যার কারণে রিপোর্ট তৈরি করতে এতো সময় লাগছে।আর এই কমিটির আহ্বায়ক রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানজিউল ইসলাম জীবন এর ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে প্রথমে তিনি অপরাগতা প্রকাশ করেন উপাচার্যের  কাছে।তখন  থেকে এভাবে তদন্ত কমিটি ঝুলে আছে বিনা তদন্ত ছাড়া।

এঘটনার সূত্রপাত গত ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত স্নাতকোত্তরের প্রথম সেমিস্টারের মিডটার্ম পরীক্ষায়। অভিযোগ রয়েছে, ঐ পরীক্ষায় অংশ না নিয়েই পাশ করেছেন সুরাইয়া ইয়াসমিন ঐশী, যিনি বেরোবি শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। বিষয়টি জানাজানি হলে গত ২২ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। তবে দীর্ঘ ৭ মাস পার হলেও প্রতিবেদন জমা দেয়নি কমিটি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করেও কীভাবে একজন শিক্ষার্থী পাশ করতে পারে, সেটি দুর্নীতির বড় উদাহরণ। অভিযোগ রয়েছে, ঐশী বিশ্ববিদ্যালয়ে সংগঠনের প্রভাব খাটিয়ে পরীক্ষায় অংশ না নিয়ে পাস করেছেন। তার সহপাঠীরাও দাবি করেছেন, তারা ঐশীকে মিডটার্ম পরীক্ষায় উপস্থিত থাকতে দেখেননি।

এ বিষয়ে একই বিভাগের শিক্ষার্থী ইমরান হোসেন বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন এর বিষয়ে কিছুই বলার নেই, আমাদের সম্মানিত ভিসি স্যার তার কিছু একান্ত মানুষ নিয়ে নিজস্ব কিছু অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নে ব্যস্ত। তারা যখন যেটা চাইবে হয়ত তখন সেটা হবে, আর তারা তো অদৃশ্য শক্তির বাইরে কথা বলার মতো মানুষ না। সমস্যা হবে তদন্ত কমিটি গঠন ও হবে কিন্তু প্রতিবেদন দেওয়া বা শাস্তির ব্যবস্থা করা সেটা হয়ত পারছেন না আমাদের সম্মানিত ভিসি স্যার তার উপর ওয়ালার কথার বাইরে গিয়ে কিছু করতে।  তবে সুস্পষ্ট একটি কথা বেরোবির প্রশাসনকে জানিয়ে দিতে চাই, মুলা কিন্তু একটি সাময়িক ফসল সারাবছর পাওয়া যায় না, বেরোবির শিক্ষার্থীরা যেদিন আবারও ১৬-ই জুলাইয়ের মতো গর্জে উঠবে সেদিন কেউ গা বাঁচানোর জায়গা পাবে না আজকে যাদের বাঁচাতে এতো কূটকৌশল সেদিন কিন্তু তারা এগিয়ে আসবে না।

ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে শুরুতে ঐশী ফোন রিসিভ করেননি। পরে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ   করা হলে তিনি বলেন পরীক্ষায় আমি  অংশগ্রহণ করেছি।তবে কখন কবে পরীক্ষা দিয়েছে এ বিষয়ে কোনো সঠিক তথ্য দিতে পারে নি।। তবে তার বক্তব্য এবং উপস্থিতির বাস্তব প্রমাণের মধ্যে পার্থক্য থাকায় বিতর্ক আরও ঘনীভূত হয়। ১৬ জুলাই ছাত্রলীগের হামলায় নিহত আবু সাঈদের ঘটনার পর থেকে ঐশী আত্মগোপনে রয়েছেন।

এঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে অভিযুক্ত শিক্ষক, গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. রুহুল আমিনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ দপ্তরের পরিচালক পদ থেকে অব্যাহতি দেয় প্রশাসন। তবে তার বিরুদ্ধে অন্য কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

তদন্ত কমিটির  সদস্যসচিব  গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আব্দুল হান্নান বলেন, আমরা কাজ করেছি। তদন্ত চলমান। শ্রীগ্রই রিপোর্ট দিব আমরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ছাত্রলীগ নেত্রী ঐশী পরীক্ষা না দিয়ে পাস করেছেন।

পরীক্ষা না দিয়েই পাস ছাত্রলীগ নেত্রী,দীর্ঘদিন সময় পার হলেও জমা হয়নি তদন্ত প্রতিবেদন

আপডেট সময় : ০৫:৫০:২৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী সুরাইয়া ইয়াসমিন ঐশী পরীক্ষায় অংশ না নিয়েই পাস করেছেন। সেই সময় পরীক্ষা না দিয়ে  ছাত্রলীগ নেত্রীকে পাস করার অভিযোগ শিক্ষকের বিরুদ্ধে,এমন অভিযোগে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় নিউজ হওয়ার পর  সারাদেশে তোলপাড় হয়ে যায়। পরে সত্যতা বের করার জন্য  গঠিত হয় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি ।কিন্তু ৭ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত কোনো প্রতিবেদন জমা পড়েনি। তদন্ত প্রতিবেদন জমা না দেওয়ার কারণ হিসেবে পক্ষপাতী মনোভাবকে দায়ী করেছেন অনেকেই। 

বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায় যে, তদন্ত কমিটির সদস্যরা এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো তদন্তই করেনি।সেখানে রিপোর্ট জমা ত অনেক দূরের বিষয়। কারণ সদস্য সচিব হিসেবে তদন্ত কমিটিতে ছিলেন গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল হান্নান।সেকারণে এখানে পক্ষপাতের সম্ভাবনা আছে বলে অনেকে মনে করতেছেন।যার কারণে রিপোর্ট তৈরি করতে এতো সময় লাগছে।আর এই কমিটির আহ্বায়ক রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানজিউল ইসলাম জীবন এর ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে প্রথমে তিনি অপরাগতা প্রকাশ করেন উপাচার্যের  কাছে।তখন  থেকে এভাবে তদন্ত কমিটি ঝুলে আছে বিনা তদন্ত ছাড়া।

এঘটনার সূত্রপাত গত ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত স্নাতকোত্তরের প্রথম সেমিস্টারের মিডটার্ম পরীক্ষায়। অভিযোগ রয়েছে, ঐ পরীক্ষায় অংশ না নিয়েই পাশ করেছেন সুরাইয়া ইয়াসমিন ঐশী, যিনি বেরোবি শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। বিষয়টি জানাজানি হলে গত ২২ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। তবে দীর্ঘ ৭ মাস পার হলেও প্রতিবেদন জমা দেয়নি কমিটি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করেও কীভাবে একজন শিক্ষার্থী পাশ করতে পারে, সেটি দুর্নীতির বড় উদাহরণ। অভিযোগ রয়েছে, ঐশী বিশ্ববিদ্যালয়ে সংগঠনের প্রভাব খাটিয়ে পরীক্ষায় অংশ না নিয়ে পাস করেছেন। তার সহপাঠীরাও দাবি করেছেন, তারা ঐশীকে মিডটার্ম পরীক্ষায় উপস্থিত থাকতে দেখেননি।

এ বিষয়ে একই বিভাগের শিক্ষার্থী ইমরান হোসেন বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন এর বিষয়ে কিছুই বলার নেই, আমাদের সম্মানিত ভিসি স্যার তার কিছু একান্ত মানুষ নিয়ে নিজস্ব কিছু অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নে ব্যস্ত। তারা যখন যেটা চাইবে হয়ত তখন সেটা হবে, আর তারা তো অদৃশ্য শক্তির বাইরে কথা বলার মতো মানুষ না। সমস্যা হবে তদন্ত কমিটি গঠন ও হবে কিন্তু প্রতিবেদন দেওয়া বা শাস্তির ব্যবস্থা করা সেটা হয়ত পারছেন না আমাদের সম্মানিত ভিসি স্যার তার উপর ওয়ালার কথার বাইরে গিয়ে কিছু করতে।  তবে সুস্পষ্ট একটি কথা বেরোবির প্রশাসনকে জানিয়ে দিতে চাই, মুলা কিন্তু একটি সাময়িক ফসল সারাবছর পাওয়া যায় না, বেরোবির শিক্ষার্থীরা যেদিন আবারও ১৬-ই জুলাইয়ের মতো গর্জে উঠবে সেদিন কেউ গা বাঁচানোর জায়গা পাবে না আজকে যাদের বাঁচাতে এতো কূটকৌশল সেদিন কিন্তু তারা এগিয়ে আসবে না।

ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে শুরুতে ঐশী ফোন রিসিভ করেননি। পরে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ   করা হলে তিনি বলেন পরীক্ষায় আমি  অংশগ্রহণ করেছি।তবে কখন কবে পরীক্ষা দিয়েছে এ বিষয়ে কোনো সঠিক তথ্য দিতে পারে নি।। তবে তার বক্তব্য এবং উপস্থিতির বাস্তব প্রমাণের মধ্যে পার্থক্য থাকায় বিতর্ক আরও ঘনীভূত হয়। ১৬ জুলাই ছাত্রলীগের হামলায় নিহত আবু সাঈদের ঘটনার পর থেকে ঐশী আত্মগোপনে রয়েছেন।

এঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে অভিযুক্ত শিক্ষক, গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. রুহুল আমিনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ দপ্তরের পরিচালক পদ থেকে অব্যাহতি দেয় প্রশাসন। তবে তার বিরুদ্ধে অন্য কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

তদন্ত কমিটির  সদস্যসচিব  গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আব্দুল হান্নান বলেন, আমরা কাজ করেছি। তদন্ত চলমান। শ্রীগ্রই রিপোর্ট দিব আমরা।