প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যাচ্ছে দর্শনার্থীরা।
সবুজ প্রকৃতি ও সমুদ্রের সৌন্দর্য ডাকছে পর্যটকদের

- আপডেট সময় : ০৫:২৪:১০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ অগাস্ট ২০২৫ ৫৭ বার পড়া হয়েছে
সমুদ্র সৈকতজুড়ে সবুজ ঘাষের বিছানা।পা ফেলতেই কাদামাখা মাটির আস্তরণে নরম ঘাসের রাজত্ব।একদিকে সাগর,অন্যদিকে নদী।চারদিকে কেওড়া গাছের শ্বাসমূল বেড়িয়ে আছে।সবুজ গালিচা বিছানো ছোট ছোট গাছের টিলার মাঝখান দিয়ে এঁকে-বেঁকে গেছে সরু নালা। এই নালাগুলো জোয়ারের সময় পানিতে ভরে উঠে। কলকল ধ্বনিতে জোয়ারের ছোট্ট ছোট্ট ঢেউ আছড়ে পড়ছে সৈকতে। আর আঁকাবাঁকা মাটির ভাঁজে জমছে পানি। মাটির ওপর সবুজ ঘাস ঢেউয়ে পানিতে ভিজে যেন সতেজ হচ্ছে। কেউ চাইলে বিকেলের মিষ্টি রোদে সবুজ ঘাসে বসে সাগরের পানিতে পা ভিজিয়ে চুপচাপ সময় কাটাতে পারেন দীর্ঘক্ষণ। লাল কাঁকড়ার দৌড়াদৌড়ি আর সূর্যাস্তের দৃশ্য দেখতে দেখতে হারিয়ে যেতে পারেন কল্পনার সাগরে। মনোমুগ্ধকর এই স্থানের নাম ‘নিদ্রারচর সমুদ্রসৈকত,
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এই সৈকতটি বরগুনা জেলার তালতলী উপজেলায়। এটি পায়রা, বিষখালী, বলেশ্বর ও বঙ্গপসাগরের মোহনায় অবস্থিত।‘নিদ্রারচর সমুদ্রসৈকত,থেকে ৩ কিলোমিটার উত্তরে ‘শুভ সন্ধ্যা সমুদ্রসৈকত,।‘নিদ্রারচর সমুদ্রসৈকত,থেকে ৩ কিলোমিটার দক্ষিণে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন টেংরাগিরি বা ফাতরার বন ও সোনাকাটা ইকোপার্ক অবস্থিত। এছাড়াও রয়েছে আদিবাসী জনগোষ্ঠী রাখাইন সম্প্রদায়। সব মিলিয়ে ‘নিদ্রারচর সমুদ্রসৈকত,ও এর আশপাশের এলাকা পর্যটকদের জন্য একটি সম্পূর্ণ প্যাকেজ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
শুভ সন্ধ্যা সমুদ্রসৈকতঃ
শুভসন্ধ্যা একটি সমুদ্র সৈকতের নাম। সমুদ্রের কোল ঘেঁষা তালতলীর নিশান-বাড়িয়া ইউনিয়নের নল বুনিয়ায় অবস্থিত এই শুভসন্ধ্যা সৈকতটি। বরগুনার প্রধান তিনটি নদী পায়রা, বিষখালী ও বলেশ্বর নদীর মিলিত জলমোহনায় এই সৈকতটি দাঁড়িয়ে আছে যৌবনা রূপ নিয়ে। এই বেলাভূমিটি প্রায় চার কিলোমিটার লম্বা এলাকা জুড়ে বিস্মৃত। তালতলী উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে সোনাকাটা ইকোপার্ক সংলগ্ন নলবুনিয়ার এই চরটি এখন অপার সম্ভাবনাময় পর্যটন এলাকা।
সোনাকাটা ইকোপার্কঃ
সমুদ্র তীরের দক্ষিণা হাওয়াকে গাঁয়ে মেখে প্রকৃতির সান্নিধ্যে গড়ে ওঠা একটি পর্যটন কেন্দ্র টেংরাগিরি ইকোপার্ক। প্রাকৃতিক নিয়মে জন্ম নেওয়া ম্যানগ্রোভ বৃক্ষরাজির এই বনটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশের পর্যটক মহলে। স্থানীয় জনপদ থেকে শুরু করে সমগ্র বরিশাল বিভাগের মানুষের কাছে একটি বিশেষ পছন্দের পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিণত হয়েছে টেংরাগিরি ইকোপার্ক। বিশেষ করে ২০১০ সালে সরকারি সহায়তায় ইকো ট্যুরিজম পরিকল্পনার মাধ্যমে বনটিকে সজ্জিত করার পরে দৃষ্টি কাড়ে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের।
রাখাইন পল্লীঃ
তালতলী উপজেলার কবিরাজ পাড়া, তালতলীপাড়া, আগাঠাকুরপাড়া, তাঁতিপাড়া, মনুখাপাড়া, মোমেষেপাড়া, ঠংপাড়া, লাউপাড়া, ছাতনপাড়া, তালুকদারপাড়া, বড় অংকুপাড়া, ছোটো অংকুপাড়া, ও সওদাগর পাড়াসহ রাখাইন সম্প্রদায়ের মোট ১৩ টি পল্লী রয়েছে। এসব পল্লীতে বসবাস করছেন প্রায় ২ হাজার রাখাইন।
স্থানীয় পর্যটন উদ্যোক্তা আরিফ রহমান বলেন,‘নিদ্রারচর সমুদ্রসৈকত’সৈকতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং বৈচিত্র্য পর্যটকরে সহজেই আকর্ষণ করতে সক্ষম। এখানের পর্যটন স্পটগুলোতে অবকাঠামো উন্নত করা গেলে দেশের অন্যতম প্রধান পর্যটনকেন্দ্রে পরিণত হতে পারে।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে সালমা বলেন,‘নিদ্রারচর সমুদ্রসৈকতকে কেন্দ্র করে পর্যটন শিল্পের বিকাশে সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করছে। এছাড়াও সবগুলো পর্যটন স্পটে পর্যটকদের জন্য নিরাপত্তা এবং সুবিধা নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি।