পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় দুই বিএনপি নেতার মালিকানাধীন কয়েকটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় কলাপাড়া পৌর শহরে এসব ঘটনা ঘটে।
কলাপাড়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও কলাপাড়া পৌরসভার সাবেক মেয়র হুমায়ুন সিকদারের মালিকানাধীন একটি আবাসিক হোটেল (সদর রোড এলাকায়) ও রড-সিমেন্টের দোকানে হামলা চালানো হয়। সেই সঙ্গে কলাপাড়া পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কাজল তালুকদারের মালিকানাধীন কলাপাড়া ডিজিটাল (নতুন বাজার এলাকায়) প্রেসেও হামলার ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, হামলাকারীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে হুমায়ুনের মালিকানাধীন হোটেলটির দোতলার জানালার কাচ ভেঙে ফেলেন। একই ভবনের নিচে তাঁর রড-সিমেন্টের দোকানের শাটার লাঠিসোঁটা দিয়ে ভেঙে ফেলা হয়।
হুমায়ুন সিকদার বলেন, ‘ছাত্রলীগের ছেলেরা মিছিল নিয়ে এসে আমার মালিকানাধীন আবাসিক হোটেল ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর করেছে। হোটেলের সামনে ও পেছনে থাকা দুটি সিসি ক্যামেরা ওরা ভেঙে নিয়ে গেছে। তবে অল্পের জন্য আমার বড় ছেলে আবুল হাসনাত হামলা থেকে রক্ষা পেয়েছে। মূলত সন্ত্রাসীরা ওকে লক্ষ্য করেই হামলা করতে এসেছিল। হাসনাতকে না পেয়ে হোটেল ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ওপর হামলা-ভাঙচুর করেছে। আমি সঙ্গে সঙ্গে ফোন করে এ হামলার ঘটনা পুলিশকে জানিয়েছি।’
ছাত্রলীগের ছেলেরা মিছিল নিয়ে এসে আমার মালিকানাধীন আবাসিক হোটেল ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর করেছে। হোটেলের সামনে ও পেছনে থাকা দুটি সিসি ক্যামেরা ওরা ভেঙে নিয়ে গেছে। তবে অল্পের জন্য আমার বড় ছেলে আবুল হাসনাত হামলা থেকে রক্ষা পেয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি হুমায়ুন সিকদার
বিএনপির স্থানীয় আরেক নেতা কাজল তালুকদার অভিযোগ করেন, ‘আমাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের হামলার সঙ্গে ছাত্রলীগের সভাপতিসহ ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা জড়িত। উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মুসা ৩০ থেকে ৪০ জন ছাত্রলীগ কর্মীকে নিয়ে মিছিল করে এসে আমাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালায়। তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রম সাধারণ মানুষ প্রত্যক্ষ করেছে। এমনকি ওই সন্ত্রাসীরা আমার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান না খোলার জন্য হুমকি দিয়ে গেছে।’
কাজল তালুকদার আরও বলেন, ‘আমার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালানোর পর তারা মিছিল নিয়ে উপজেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের তালা ভাঙার চেষ্টা করে। তালা ভাঙতে না পেরে তারা দলীয় কার্যালয়ের দরজায় লাঠিসোঁটা দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে। এ সময় এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। আশপাশের ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়।’
এ বিষয়ে জানতে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান ওরফে মুসার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
এ বিষয়ে জানতে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান ওরফে মুসার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। তবে কলাপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালেব তালুকদার এ হামলা সম্পর্কে বলেন, ‘আমি বরিশালে চিকিৎসায় আছি। আমি খোঁজখবর নিয়ে দেখছি। ছাত্রলীগ এ ঘটনায় জড়িত থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। তবে কারও কাছ থেকে কোনো অভিযোগ পাইনি।’