সমাচার ডেস্ক
ডিজিটাল বাংলাদেশ করায় এখন হয়রানি ছাড়াই ঘরে বসে হজের সব কাজ করা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার গত ১৫ বছরে ইসলামের কল্যাণে ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে। শুধু ইসলাম ধর্ম নয়, আমরা সব ধর্মাবলম্বীদের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি। আজ বুধবার (৮ মে) দুপুরে রাজধানীর আশকোনা হজ ক্যাম্পে ২০২৪ সালের জন্য হজ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এদিন সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে হিজরি ১৪৪৫ সালের হজ কার্যক্রমের উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এখন অনেক এগিয়ে গেছে, এখন হজের সব কাজ ঘরে বসেই করা যাচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলবো; সেটা ২০০৮ সালে নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষণা দিয়েছিলাম। আজ তা বাস্তবায়ন হয়েছে; আর বাস্তবায়ন হয়েছে বলেই সেই সুযোগ-সুবিধাটা দেশবাসী পাচ্ছে। এখন ঘরে বসেই হজের সব কাজ সহজভাবে করা যাচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশে গড়তে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট -১ উৎক্ষেপন করা ব্রডব্যান্ড সংযোগ সমস্ত জায়গাতে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। এসব কাজ করার কারণে কিন্তু সহজ পদ্ধিতে হজের কাজগুলো আপনারা করতে পারছেন। কোনো রকম হয়রানির হতে হয় না এখন। অনলাইনে হজের রেজিস্ট্রেশন করা যায়, তারও ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিটি এলাকাতে ডিজিটাল সেন্টার করা হয়েছে, সেখানে গিয়েও রেজিস্ট্রেশন করা যায়। আধুনিক প্রযুক্তি আমাদের সেই সুযোগটা সৃষ্টি করে দিয়েছে।
সরকারপ্রধান বলেন, হজ ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভের অন্যতম। পবিত্র কোরআনের সুরা আল ইমরানের ৯৭নং আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে, সারা বিশ্বের মুসলমানদের জন্য হজ পালন করা ফরজ; যদি এ গৃহ পর্যন্ত পৌঁছার শক্তি ও সামর্থ্য থাকে। হজ মুমিনকে নিষ্পাপ করে দেয়। কবুল হজের প্রতিদান কেবল জান্নাত। তিনি বলেন, হজ পালনের দুর্ভোগ, অব্যবস্থাপনা, মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য, হজযাত্রীদের হয়রানি, ভিসা জটিলতা, ফ্লাইট বিপর্যয় সমস্যার সমাধান হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য নেতৃত্বে আমরা পেয়েছি আমাদের মহান স্বাধীনতা। স্মরণ করছি জাতীয় চার নেতা, মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ এবং ২ লাখ নির্যাতিত মা-বোনকে। বীর মুক্তিযোদ্ধা ভাই-বোনদের সশ্রদ্ধ ও সালাম জানাই। গভীর বেদনার সঙ্গে স্মরণ করছি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ঘৃণ্য হত্যাকাণ্ডের শিকার আমার পরিবারের সদস্যসহ সব শহীদকে।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, জাতির পিতা সবসময়ই শান্তি ও মানবতার ধর্ম ইসলামকে সর্বোচ্চ মর্যাদা দিয়েছেন। তিনি হিজবুল বাহার জাহাজ ক্রয় করে বাংলাদেশ থেকে সমুদ্রপথে হজযাত্রী পাঠান। হজ পালনের জন্য সরকারি অনুদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। তিনি রাষ্ট্রীয়ভাবে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপনের ব্যবস্থা নেন। বেতার ও টিভিতে অনুষ্ঠান শুরু ও সমাপ্তিতে কুরআন তিলাওয়াতের প্রচলন এবং ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.), শবেকদর ও শবেবরাতে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও মাদ্রাসা বোর্ড প্রতিষ্ঠা করেন। তাবলিগ জামায়াতের জন্য কাকরাইল মসজিদে জমি দান, রাশিয়াতে প্রথম তাবলিগ জামায়াত প্রেরণ এবং টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে বিশ্ব ইজতেমার জন্য জায়গা বরাদ্দ দেন। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উন্নয়ন, সম্প্রসারণ ও সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেন। তিনিই প্রথম আইন করে মদ, জুয়া, হাউজি, ঘোড়দৌড় ও অসামাজিক কার্যকলাপ নিষিদ্ধ করেন।
তিনি বলেন, জাতির পিতা মুসলিম বিশ্বসহ আরব দেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। তার দূরদর্শিতায় বাংলাদেশ ১৯৭৪ সালে ওআইসির সদস্যপদ লাভ করে। ১৯৭৩ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে বঙ্গবন্ধু আরব বিশ্বকে সমর্থন দেন। সে সময় তিনি ১ লাখ পাউন্ড চা, ২৮ সদস্যের মেডিকেল টিম ও একটি স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী পাঠান। ১৯৭৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি লাহোরে অনুষ্ঠিত ওআইসি শীর্ষ সম্মেলনে জাতির পিতা বলেন, ‘আরব ভাইদের ওপর যে নিদারুণ অবিচার হয়েছে অবশ্যই তার অবসান ঘটাতে হবে। অন্যায়ভাবে দখলকৃত আরব ভূমি অবশ্যই ছেড়ে দিতে হবে। আমাদের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে হবে জেরুজালেমের ওপর’।
শেখ হাসিনা বলেন, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট সপরিবারে জাতির পিতাকে হত্যা করার পর বাংলাদেশে নেমে আসে এক অন্ধকার যুগ। যে মদের লাইসেন্স বঙ্গবন্ধু বন্ধ করে দিয়েছিলেন তা সামরিক শাসক জিয়া উন্মুক্ত করে দেয়। হজযাত্রী পরিবহনের জাহাজ ‘হিজবুল বাহার’ কে প্রমোদতরীতে পরিণত করে। তিনি বলেন, আমি ১৯৮৪ সালে প্রথম ওমরাহ ও ১৯৮৫ সালে প্রথম হজ পালন করি। এরপর যতবারই হজে গিয়েছি ততবারই মিনার তাঁবুতে গিয়ে আমাদের হজ ব্যবস্থাপনার কী কী অসুবিধা আছে সেগুলো নোট করে এনেছি। সে সময় আমি সরকারে না থেকেও সৌদি রাষ্ট্রদূত এবং হজ ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিতদের এ বিষয়ে কাজ করার জন্য অনুরোধ করেছি।
সরকারপ্রধান বলেন, ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করে আমরা হজ পালন সহজ ও সুষ্ঠু করার জন্য নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করি। আমাদের গৃহীত পদক্ষেপের ফলে হজ এবং ওমরায় গমনকারী বাংলাদেশের মানুষের অনেক কষ্ট লাঘব হয়। হজযাত্রীর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেতে থাকে।
তিনি বলেন, ২০০৯ সালে সরকার গঠন করে আমরা হজ ব্যবস্থাপনাকে সম্পূর্ণরূপে প্রযুক্তিনির্ভর করার পদক্ষেপ নেই। আমরা এখন ‘ই-হজ ব্যবস্থাপনা’ প্রবর্তন করেছি। এর ফলে অতীতে হজ পালনের দুর্ভোগ, অব্যবস্থাপনা, মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য, হজযাত্রীদের হয়রানি, ভিসা জটিলতা, ফ্লাইট বিপর্যয় ইত্যাদি সমস্যার সমাধান হয়েছে। ই-হজ ব্যবস্থাপনার আওতায় হজযাত্রীদের প্রাক-নিবন্ধন, নিবন্ধন, রিফান্ড, মক্কা রোড সার্ভিস, ই-হেলথ, ই-ভিসা, ফ্লাইট, হেল্পডেস্ক, কল সেন্টার, এজেন্সি প্রোফাইল ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পাদিত হচ্ছে। হজের জন্য পৃথক হজ পোর্টাল www.hajj.gov.bd এবং e-Hajj BD মোবাইল অ্যাপস তৈরি করা হয়েছে। এর ফলে হজযাত্রীগণ তাদের ভিসা, পাসপোর্ট, মক্কা/মদিনায় আবাসন, মেডিকেল সুবিধা, সৌদি আরব গমন, প্রত্যাগমন ইত্যাদি বিষয়ে সহজে সেবা গ্রহণ করতে পারছেন।
সরকারপ্রধান বলেন, আমরা বিইএফটিএন (Bangladesh Electronic Fund Transfer Network) এর মাধ্যমে অনলাইনে হজযাত্রীদের সব রিফান্ড আবেদন নিষ্পত্তি করছি। সৌদি আরবে হজযাত্রীদের প্রয়োজনীয় ব্যয়ের সব অর্থ ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে হজ এজেন্সির আইব্যান (International Bank Account Number) হিসেবে প্রেরণ করা হচ্ছে। আশকোনার হজ অফিসে হেল্প ডেস্ক স্থাপন করে কল সেন্টারের মাধ্যমে হজযাত্রীদের সার্বক্ষণিক সেবা প্রদান করা হচ্ছে। এখন ১৬১৩৬ নম্বরে ফোন করে হজের যে কোনো তথ্য সহজেই সবাই জানতে পারছেন। হজ ফ্লাইট ব্যবস্থাপনা ও মনিটরিং-এর মাধ্যমে ফ্লাইট বিপর্যয় রোধ করা সম্ভব হচ্ছে। হজযাত্রীদের লাগেজ হারানো এবং এ বিষয়ক অব্যবস্থাপনা আমরা দূর করেছি। তিনি আরো বলেন, আমরা মক্কা-মদিনা ও জেদ্দায় মেডিকেল সেন্টার স্থাপন করেছি। এর ফলে হজযাত্রীগণের স্বাস্থ্য সেবা সুরক্ষিত হয়েছে। হজ কার্যক্রম সহজীকরণের জন্য সোনালী ব্যাংক, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন-এর কার্যালয়, নির্বাচন কমিশনের এনআইডি প্রকল্প, এনটিএমসি ও বিসিসি’র সার্ভারের সঙ্গে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আন্তঃসংযোগ স্থাপন করা হয়েছে। হজযাত্রীদের অবস্থানের সুবিধার্থে আমরা হজ ক্যাম্প ঢাকার ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ করেছি। মহিলা এবং পুরুষ হজযাত্রীদের জন্য পৃথক ডরমিটরি স্থাপন করা হয়েছে। ডরমিটরিতে এসি স্থাপন করা হয়েছে। হজ অফিস ঢাকায় হজযাত্রীদের বোর্ডিং, চেক-ইন ও বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন সম্পন্নকরণের সব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। হজ অফিস হতে হজযাত্রীরা যাতে সরাসরি নিরাপদে ও সহজে বিমানবন্দর পৌঁছাতে পারেন সেজন্য হজ অফিস হতে বিমানবন্দর পর্যন্ত আন্ডার পাস নির্মাণের কার্যক্রম অচিরেই শুরু হবে। জেদ্দা ও মদিনা বিমানবন্দরে দীর্ঘ সময় অপেক্ষার কষ্ট লাঘবের জন্য সৌদি সরকারের সঙ্গে আমরা ২০২২ সালে “রোড-টু-মক্কা সার্ভিস চুক্তি” স্বাক্ষর করেছি। এখন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হজযাত্রীদের সৌদি আরবের প্রি-অ্যারাইভাল ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হচ্ছে। ২০০৯ সালে আমরা জেদ্দায় পৃথক হজ অফিস স্থাপন করে সেখানে একজন কাউন্সিলর ও একজন হজ-কনসাল নিয়োগ দেই। জেদ্দা কিং আব্দুল আজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের হজ টার্মিনালে হজযাত্রীদের বিশ্রামের জন্য আমরা প্লাজা ভাড়া করে দিয়েছি।
সরকারপ্রধান বলেন, মক্কা-মদিনা এবং মিনা-আরাফাহ-মুজদালিফায় হজযাত্রীদের প্রয়োজনীয় সব সেবা নিশ্চিত করার জন্য আমরা মোনাজ্জেম, হজ গাইড, সমন্বিত হজ চিকিৎসক টিম এবং সহায়ক টিম প্রেরণ করে থাকি। এদের সহায়তায় হজযাত্রীগণ সহজেই ও স্বাচ্ছন্দে হজ পালন করে দেশে ফিরতে পারছেন। আমরা বিমানের হজ পূর্ববর্তী খালি ফ্লাইটে জমজমের পানি আনার ব্যবস্থা করেছি। মক্কা-মদিনায় আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির মাধ্যমে হোটেল ভাড়া করা হচ্ছে। ফলে এ বিষয়ে পূর্ণস্বচ্ছতা নিশ্চিত হয়েছে।
সরকারের বহুমুখী উদ্যোগের ফলে এখন আর ইহরামের কাপড় পরিধান করে বিমানবন্দর বা হজ ক্যাম্পের সামনে এসে হজযাত্রীদের মানববন্ধন করতে হয় না। হজযাত্রীগণ এখন পূর্ব থেকেই ভিসার তথ্য এবং বিমান যাত্রার তারিখ নিশ্চিত হয়ে বাড়ি থেকে হজ ক্যাম্পে আসেন এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই নির্ধারিত ফ্লাইটে আরোহণ করে জেদ্দা কিংবা মদিনার উদ্দেশে গমন করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২১ এবং হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা বিধিমালা, ২০২২ প্রণয়ন করেছি। এর ফলে হজ কার্যক্রমে অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম ও অসদাচরণের অভিযোগের প্রতিকার সহজ হয়েছে। হজযাত্রীদের সাথে কোনো এজেন্সি প্রতারণা বা হয়রানি করলে সে এজেন্সির বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। আমি হজ এজেন্সিগুলোকেও আরো প্রযুক্তি-নির্ভর ও স্মার্ট হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি যাতে তারা হজযাত্রীদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করতে পারে। তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার গত ১৫ বছরে ইসলামের কল্যাণে ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে। আমরা প্রতিটি জেলা এবং উপজেলায় একটি করে ৫৬৪টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে চলেছি। এ পর্যন্ত ৩০০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন করা হয়েছে। আমরা ঢাকায় ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছি। দেশের ৮০টি মাদ্রাসায় অনার্স কোর্স চালু করা হয়েছে। আমরা দেশের ৩৫ হাজার মসজিদে পাঠাগার নির্মাণ করে দিয়েছি। পবিত্র কোরআনের ডিজিটাল ভার্সন তৈরি করেছি। জাতীয় শিক্ষা নীতিতে নৈতিক ও ধর্মীয় শিক্ষাকে অন্তর্ভুক্ত করেছি। মসজিদভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রমকেও জাতীয় শিক্ষানীতির অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, শুধু ইসলাম ধর্ম নয়, আমরা সব ধর্মাবলম্বীদের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট আইন, ২০১৮; বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট আইন, ২০১৮; এবং খ্রিস্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট আইন, ২০১৮ প্রণয়ন করেছি। সকল ধর্মের মানুষ স্বাধীন ও মুক্ত পরিবেশে নিজ নিজ ধর্ম পালন করে যাচ্ছেন।
ইসলাম শান্তি, সম্প্রীতি ও মানবতার ধর্ম উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিন্তু বিএনপি-জামাত জোট আমলে বাংলাদেশে ইসলামের নামে মানুষ হত্যা, খুন, বোমাবাজি ছিলো নিত্যনৈমত্তিক বিষয়। আমরা সেই ভীতিকর অবস্থা থেকে দেশকে মুক্ত করেছি। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগে এক ঐতিহাসিক বেতার ভাষণে জাতির পিতা বলেছিলেন, “লেবেল সর্বস্ব ইসলামে আমরা বিশ্বাসী নই। আমরা বিশ্বাসী-ইনসাফের ইসলামে। আমাদের ইসলাম হযরত রাসুলে করীম (সা.)-এর ইসলাম, যে ইসলাম জগতবাসীকে শিক্ষা দিয়েছে ন্যায় ও সুবিচারের অমোঘ মন্ত্র”। আওয়ামী লীগ সরকার জাতির পিতার আদর্শ অনুসরণ করেই বিশ্বের বুকে বাংলাদেশকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মডেল হিসেবে পরিচিত করেছে। তিনি আরো বলেন, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় হজ ব্যবস্থাপনার গুরুদায়িত্ব অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করে চলেছে। এ বছর হজযাত্রীর সংখ্যা ৮৫ হাজার ২৫৭ জন। হজ ব্যবস্থাপনার আমাদের সরকারের এ সফলতার ধারা আগামী দিনগুলোতেও অব্যাহত থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি। হজ পালনের উদ্দেশ্যে মহান আল্লাহ তা’আলার মেহমান হিসেবে যারা পবিত্র মক্কা ও মদিনা শরীফ যাওয়ার জন্য ঘর থেকে বের হয়ে এসেছেন, আমি তাদের সকলের জন্য মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে দোয়া করছি। মহান আল্লাহ তায়ালা আপনাদের হজ সহজ ও কবুল করুন। আপনারা যেন সুষ্ঠু, সুন্দর ও নিরাপদে হজব্রত পালন করে দেশে ফিরে আসেন। একই সাথে হজ পালনকালে বাংলাদেশের উন্নতি ও সমৃদ্ধির জন্য আপনারা দোয়া করবেন-এ প্রত্যাশা রাখছি।
ফিলিস্তিনে নির্যাতিত মুসলমানদের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের সব মুসলিম দেশগুলো একসঙ্গে কাজ করলে ফিলিস্তিনিসহ বিশ্ব মুসলিমের দাবি আদায় সহজ হতো। ইসলামের নামে কিছু লোক অপকর্ম করে মুসলমানদের বদনাম দিয়ে যায় এটি দুঃখজনক। সবসময় এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। তিনি আরো বলেন, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয় এমন কোনো কাজ যেন কেউ করতে না পারে, সেজন্য সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে।