ঢাকা ০৭:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বাকৃবিতে হল বন্ধের প্রতিবাদে বিক্ষোভ, ছয় দফা দাবি শিক্ষার্থীদের সেন্ট মার্টিনের ১৮ বাংলাদেশি জেলে মিয়ানমারের আরাকান আর্মির হাতে অপহৃত চবি ক্যাম্পাসে সংঘর্ষের পর ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ, সুনসান পরিবেশ আফগানিস্তানে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ৫০০; আহত সহস্রাধিক যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ১০ মিনিট বন্ধ ছিল মেট্রোরেল, পরে আবার চালু ডাকসু নির্বাচন: শতবর্ষে মাত্র ৩৭ বার, স্বাধীনতার পর ৭ বার। মেসির ইন্টার মায়ামিকে স্তব্ধ করে লিগস কাপের চ্যাম্পিয়ন সিয়াটেল, ৩-০ গোলে হার জুলাই গণহত্যা মামলায় শেখ হাসিনাসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে আজ দশম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ, হাজির সাবেক আইজিপিও মাগুরার সাবেক এমপি শিখরের ভাই আশরাফুজ্জামান চুয়াডাঙ্গায় গ্রেপ্তার। উত্তর–দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দ্বন্দ্বে মর্গে জমছে বেওয়ারিশ লাশ

উত্তর–দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দ্বন্দ্বে মর্গে জমছে বেওয়ারিশ লাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক।
  • আপডেট সময় : ০৬:৪৩:৫২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ৬ বার পড়া হয়েছে
আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের (উত্তর ও দক্ষিণ) মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে বেওয়ারিশ লাশ দাফন কার্যক্রমে জটিলতা তৈরি হয়েছে। ফলে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালের মর্গে দিন দিন জমছে এসব লাশ।

বর্তমানে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে ২২টি এবং স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড হাসপাতাল) মর্গে আরও ৬টি লাশ পড়ে আছে। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সেপ্টেম্বর মাস শুরু হলে আবার দাফন কার্যক্রম চালু করা হবে।

দুই করপোরেশনের অবস্থান

বেওয়ারিশ লাশ দাফনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে এই কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। তবে সম্প্রতি উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মধ্যে চিঠি চালাচালির কারণে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।

  • দক্ষিণ সিটি করপোরেশন জানিয়েছে, জুরাইন কবরস্থানে মাসিক বেওয়ারিশ লাশের এক-তৃতীয়াংশ দাফন করা হবে।
  • অপরদিকে উত্তর সিটি করপোরেশন বলেছে, রায়েরবাজার কবরস্থানে উত্তর সিটির শতভাগ লাশ দাফন করা হলেও দক্ষিণ সিটির কোনো লাশ সেখানে দাফন করা যাবে না।

এমন টানাপোড়েনের কারণে হাসপাতালের মর্গগুলোতে লাশ জমে যাচ্ছে।

কবরস্থানের আয়তন ও স্থানসংকট

জুরাইন কবরস্থানের আয়তন ১৭ দশমিক ৬০ একর এবং রায়েরবাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ-সংলগ্ন কবরস্থানের আয়তন ৯৬ দশমিক ২৩ একর।

২০২৩ সালের ১৮ নভেম্বর জুরাইন কবরস্থানে সর্বশেষ বেওয়ারিশ লাশ দাফন হয়। এরপর স্থানসংকটের কারণে দীর্ঘদিন দাফন কার্যক্রম বন্ধ ছিল। গত ১৭ জুলাই থেকে পুনরায় সীমিত আকারে এক-তৃতীয়াংশ লাশ দাফন শুরু হয়।

কিন্তু উত্তর সিটি করপোরেশন গত ১৮ আগস্ট আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামকে চিঠি দিয়ে জানায়, দক্ষিণ সিটির কোনো লাশ রায়েরবাজার কবরস্থানে দাফন করা যাবে না। ফলে দক্ষিণের মর্গগুলোতে লাশ জমে থেকে সমস্যা জটিল হয়েছে।

আইনি দিক ও সমাধানের প্রয়োজন

স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন, ২০০৯ অনুযায়ী, সিটি করপোরেশন নিজ খরচে নিঃস্ব ও বেওয়ারিশ লাশ দাফন বা দাহ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ খাতে করপোরেশনের আলাদা বাজেটও থাকে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান সমাজকল্যাণ ও বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান বলেন, “কবরস্থানে স্থানসংকটের কারণে এক-তৃতীয়াংশ বেওয়ারিশ লাশ দাফনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ২০১৭ সালে। এটা যৌক্তিক। তবে বেওয়ারিশ লাশ দাফন হবে না—এটা কেউ চায় না। উত্তরের কবরস্থানে জায়গা আছে, আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম দুই করপোরেশনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এর স্থায়ী সমাধান করতে পারে।”

সারসংক্ষেপ

উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সমন্বয়হীনতার কারণে রাজধানীতে বেওয়ারিশ লাশ দাফনের প্রক্রিয়া মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এর ফলে শুধু প্রশাসনিক জটিলতাই নয়, মানবিক সংকটও সৃষ্টি হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

উত্তর–দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দ্বন্দ্বে মর্গে জমছে বেওয়ারিশ লাশ

আপডেট সময় : ০৬:৪৩:৫২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের (উত্তর ও দক্ষিণ) মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে বেওয়ারিশ লাশ দাফন কার্যক্রমে জটিলতা তৈরি হয়েছে। ফলে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালের মর্গে দিন দিন জমছে এসব লাশ।

বর্তমানে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে ২২টি এবং স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড হাসপাতাল) মর্গে আরও ৬টি লাশ পড়ে আছে। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সেপ্টেম্বর মাস শুরু হলে আবার দাফন কার্যক্রম চালু করা হবে।

দুই করপোরেশনের অবস্থান

বেওয়ারিশ লাশ দাফনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে এই কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। তবে সম্প্রতি উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মধ্যে চিঠি চালাচালির কারণে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।

  • দক্ষিণ সিটি করপোরেশন জানিয়েছে, জুরাইন কবরস্থানে মাসিক বেওয়ারিশ লাশের এক-তৃতীয়াংশ দাফন করা হবে।
  • অপরদিকে উত্তর সিটি করপোরেশন বলেছে, রায়েরবাজার কবরস্থানে উত্তর সিটির শতভাগ লাশ দাফন করা হলেও দক্ষিণ সিটির কোনো লাশ সেখানে দাফন করা যাবে না।

এমন টানাপোড়েনের কারণে হাসপাতালের মর্গগুলোতে লাশ জমে যাচ্ছে।

কবরস্থানের আয়তন ও স্থানসংকট

জুরাইন কবরস্থানের আয়তন ১৭ দশমিক ৬০ একর এবং রায়েরবাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ-সংলগ্ন কবরস্থানের আয়তন ৯৬ দশমিক ২৩ একর।

২০২৩ সালের ১৮ নভেম্বর জুরাইন কবরস্থানে সর্বশেষ বেওয়ারিশ লাশ দাফন হয়। এরপর স্থানসংকটের কারণে দীর্ঘদিন দাফন কার্যক্রম বন্ধ ছিল। গত ১৭ জুলাই থেকে পুনরায় সীমিত আকারে এক-তৃতীয়াংশ লাশ দাফন শুরু হয়।

কিন্তু উত্তর সিটি করপোরেশন গত ১৮ আগস্ট আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামকে চিঠি দিয়ে জানায়, দক্ষিণ সিটির কোনো লাশ রায়েরবাজার কবরস্থানে দাফন করা যাবে না। ফলে দক্ষিণের মর্গগুলোতে লাশ জমে থেকে সমস্যা জটিল হয়েছে।

আইনি দিক ও সমাধানের প্রয়োজন

স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন, ২০০৯ অনুযায়ী, সিটি করপোরেশন নিজ খরচে নিঃস্ব ও বেওয়ারিশ লাশ দাফন বা দাহ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ খাতে করপোরেশনের আলাদা বাজেটও থাকে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান সমাজকল্যাণ ও বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান বলেন, “কবরস্থানে স্থানসংকটের কারণে এক-তৃতীয়াংশ বেওয়ারিশ লাশ দাফনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ২০১৭ সালে। এটা যৌক্তিক। তবে বেওয়ারিশ লাশ দাফন হবে না—এটা কেউ চায় না। উত্তরের কবরস্থানে জায়গা আছে, আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম দুই করপোরেশনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এর স্থায়ী সমাধান করতে পারে।”

সারসংক্ষেপ

উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সমন্বয়হীনতার কারণে রাজধানীতে বেওয়ারিশ লাশ দাফনের প্রক্রিয়া মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এর ফলে শুধু প্রশাসনিক জটিলতাই নয়, মানবিক সংকটও সৃষ্টি হচ্ছে।