সোনালী বাংলাদেশ ইউকে: চেয়ারম্যান বদলে এলেন নাজমা মোবারেক

- আপডেট সময় : ০৬:১৪:২৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ৭ বার পড়া হয়েছে
যুক্তরাজ্যে অবস্থিত আর্থিক প্রতিষ্ঠান সোনালী বাংলাদেশ (ইউকে) লিমিটেডে বড় পরিবর্তন এসেছে। যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়াই নিয়োগ পাওয়ার কারণে চেয়ারম্যান ও অ-নির্বাহী পরিচালক আসাদুল ইসলামকে সরিয়ে দিয়েছে সরকার। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক।
অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের অনুমোদনের পর মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়। সোনালী বাংলাদেশের সিইও মাসুম বিল্লাহ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানের ৫১ শতাংশ শেয়ারের মালিক অর্থ মন্ত্রণালয় এবং ৪৯ শতাংশের মালিক সোনালী ব্যাংক।
সোনালী ব্যাংক ইউকের যাত্রা ও সংকট
২০০১ সালের ১০ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যে কার্যক্রম শুরু করে সোনালী ব্যাংক (ইউকে)। তবে ২০১০–২০১৪ সালে অর্থপাচার প্রতিরোধব্যবস্থায় দুর্বলতার কারণে ফিন্যান্সিয়াল কনডাক্ট অথরিটি (এফসিএ) ব্যাংকটিকে ৩২ লাখ পাউন্ড জরিমানা করে। এ ঘটনায় ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠানটির ব্যাংকিং লাইসেন্স স্থগিত হয়, যদিও কার্যক্রম বন্ধ হয়নি।
আসাদুল ইসলাম ২০২০ সালের জানুয়ারিতে সোনালী ব্যাংক ইউকের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। পরবর্তীতে ২০২২ সালে প্রতিষ্ঠানটি ভেঙে গঠন করা হয় সোনালী বাংলাদেশ (ইউকে) এবং সোনালী পে (ইউকে) লিমিটেড। আগের পরিচালনা পর্ষদকেই তখন বহাল রাখা হয়। ২০২৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয়বারের মতো চেয়ারম্যান হন আসাদুল ইসলাম, যার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে।
নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক
সম্প্রতি তাঁর স্বাধীন চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ প্রশ্নবিদ্ধ হয়। সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানায়, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের পরিপত্র অনুসরণ করা হয়নি, যা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের আপত্তি ছিল। পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের করপোরেট গভর্ন্যান্স কোড অনুযায়ী সরকারি চাকরি থেকে অবসরের পাঁচ বছর পূর্ণ না হলে স্বাধীন পরিচালক হওয়া যায় না—এই নিয়মও ভঙ্গ হয়েছে।
সোনালী বাংলাদেশ যে ব্যাখ্যা দেয়, তা আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি। বিভাগটির মতে, অনুমোদন ছাড়াই পুনর্নিয়োগ পাওয়া সুশাসনের পরিপন্থী। ফলে আসাদুল ইসলামকে সরানো হয়।
আর্থিক সাফল্য ও প্রতিক্রিয়া
সোনালী বাংলাদেশ ২০২২ সালে ১৫ লাখ, ২০২৩ সালে ৩১ লাখ এবং ২০২৪ সালে কর-পূর্ব মুনাফা অর্জন করেছে ১ কোটি ৫ লাখ পাউন্ড। এসব তথ্য তুলে ধরে আসাদুল ইসলাম বলেন,
“বাংলাদেশের স্বার্থেই ব্যাংকিং লাইসেন্স দরকার ছিল। আমরা সে দিকেই এগোচ্ছিলাম। এখন তা বাধাগ্রস্ত হতে পারে।”
পরিপত্র অনুসরণ না করার অভিযোগ নিয়ে তিনি বলেন,
“পরিপত্র কোনো আইন নয়, প্রয়োজনে জারি হয়, আবার বদলও হয়। ব্যাংক কোম্পানি আইনের কোনো লঙ্ঘন হয়নি। সরকারই পুরো পরিচালনা পর্ষদ নিয়োগ দিয়েছিল।”