ডাকসু নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শেষ, এখন ফলাফলের অপেক্ষা
- আপডেট সময় : ১০:৪৬:৪৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২৩ বার পড়া হয়েছে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৪টায় শেষ হয় ভোট গ্রহণ। এরপর থেকে আর কাউকে কেন্দ্রে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি, তবে ভেতরে যারা লাইনে ছিলেন তারা ভোট দিতে পেরেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান দাবি করেছেন, এবার নির্বাচনে স্বচ্ছতার ঘাটতি ছিল না। বেলা তিনটার দিকে সিনেট ভবনের ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে তিনি বলেন, ইতিমধ্যে ৭০ শতাংশের বেশি ভোট সংগ্রহ হয়েছে। কার্জন হলে একজন ভোটারকে ভুলক্রমে দুটি ব্যালট দেওয়ার ঘটনাটি দ্রুত সমাধান করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
প্রার্থীদের অভিযোগ ও মন্তব্য
- ছাত্রদল সমর্থিত ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম অভিযোগ করেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের আকাঙ্ক্ষাকে ব্যাহত করা হচ্ছে।
- শিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের জিএস প্রার্থী এস এম ফরহাদ নির্বাচনী ব্যত্যয়ের অভিযোগ করেন।
- ইসলামী ছাত্র আন্দোলন সমর্থিত প্যানেলের জিএস প্রার্থী খায়রুল হাসান অভিযোগ করেন, তাঁদের পোলিং এজেন্টকে বের করে দেওয়া হয়েছে।
- স্বতন্ত্র ভিপি প্রার্থী উমামা ফাতেমা ‘ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন’-এর প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
- বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদের জিএস প্রার্থী আবু বাকের মজুমদার নির্বাচনী পরিবেশকে আনন্দদায়ক বলেছেন।
- প্রগতি পক্ষের জিএস প্রার্থী মেঘমল্লার বসু জানান, প্রগতিশীল শক্তিগুলোর জয় হবে বলে তিনি আশাবাদী।
- স্বতন্ত্র ভিপি প্রার্থী শামীম হোসেন অভিযোগ করেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও কিছু গণমাধ্যমে প্রোপাগান্ডার মাধ্যমে তাঁর ভোট কমানোর চেষ্টা চলছে।
- স্বতন্ত্র প্রার্থী রুপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গ্যা অভিযোগ করেন, টিএসসি ভোটকেন্দ্রে তাঁর এক বান্ধবীর হাতে আগে থেকেই চিহ্ন দেওয়া ব্যালট দেওয়া হয়েছিল। তবে পোলিং কর্মকর্তা দাবি করেন, অভিযোগের প্রমাণ মেলেনি।
সাংবাদিকের মৃত্যু
ভোটগ্রহণ চলাকালে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে কার্জন হলে মারা গেছেন সাংবাদিক তরিকুল ইসলাম। দুপুরে হঠাৎ অচেতন হয়ে পড়লে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়, সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা
ভোটকে ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপথে চেকপোস্ট বসানো হয়। ক্যাম্পাসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়। টিএসসি এলাকায় পুলিশের নিয়ন্ত্রণকক্ষ স্থাপন করা হয়, যাতে শিক্ষার্থীদের চলাচল নির্বিঘ্ন থাকে।
ভোটার ও প্রার্থী সংখ্যা
এবার ডাকসুতে মোট ভোটার সংখ্যা ৩৯ হাজার ৮৭৪ জন। এর মধ্যে ৫টি ছাত্রী হলে ১৮ হাজার ৯৫৯ জন এবং ১৩টি ছাত্র হলে ২০ হাজার ৯১৫ জন ভোটার। ডাকসুর ২৮টি পদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪৭১ জন প্রার্থী, যার মধ্যে ৬২ জন ছাত্রী। এছাড়া ১৮টি হলে মোট ২৩৪ পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১ হাজার ৩৫ জন প্রার্থী।
ভোটগ্রহণ শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হলেও নানা অনিয়ম ও অভিযোগ সামনে এসেছে। এখন শিক্ষার্থীরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন ফলাফলের জন্য।