শেখ হাসিনার সঙ্গে যোগাযোগ ঠেকাতে টেলিগ্রাম–বোটিম বন্ধের চিন্তা
- আপডেট সময় : ০৭:৫০:০৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ৩৪ বার পড়া হয়েছে
আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকলেও দলের নেতা-কর্মীরা দলের সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রেখেছেন। অনলাইন বৈঠকেও তাঁরা অংশ নিচ্ছেন। সম্প্রতি গুলশানে ঝটিকা মিছিল থেকে গ্রেপ্তার হওয়া ২৪৪ জনের মধ্যে দেড় শতাধিক ব্যক্তির ব্যবহৃত ফোন থেকে এই তথ্য মিলেছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে গত রোববার অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা–সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠকে বিষয়টি আলোচনায় আসে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, আপাতত রাতে টেলিগ্রাম ও বোটিমের ব্যবহার সীমিত করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে। আর আগামী জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর অ্যাপ দুটি পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হবে।
অ্যাপ দুটি কী
টেলিগ্রাম একটি জনপ্রিয় ইন্টারনেটভিত্তিক যোগাযোগমাধ্যম। এর প্রতিষ্ঠাতা পাভেল দুরভ রুশ বংশোদ্ভূত। অন্যদিকে বোটিম অ্যাপের মাধ্যমে কণ্ঠ, ভিডিও কল ও অর্থ লেনদেন করা যায়। এর প্রধান কার্যালয় যুক্তরাষ্ট্রে।
গ্রেপ্তার হওয়া নেতা-কর্মীরা
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জব্দ করা মোবাইল ফোনের তথ্য বলছে, গ্রেপ্তার হওয়া ২৪৪ জনের মধ্যে দেড় শ জনের বেশি নিয়মিত টেলিগ্রাম ও বোটিম ব্যবহার করে শেখ হাসিনার সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন এবং অনলাইন সভায় যোগ দিতেন।
বৈঠকে দুটি গোয়েন্দা সংস্থা জানায়, সারা দেশে ইন্টারনেটভিত্তিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সক্রিয় হচ্ছেন। তফসিল ঘোষণার পর তাঁরা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারেন—এমন আশঙ্কাও প্রকাশ করা হয়।
সিম ব্যবহারে নতুন নিয়ম
বৈঠকে আরও সিদ্ধান্ত হয়, একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ পাঁচটি সিম ব্যবহার করতে পারবেন। ডিসেম্বর থেকে এ নিয়ম কার্যকর হবে। বর্তমানে একজনের নামে ১০টি সিম নেওয়া যায়।
জামিন প্রসঙ্গ
সভায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের দ্রুত জামিন পাওয়ার বিষয়ও আলোচনায় আসে। উপস্থিত কর্মকর্তাদের অনেকে মনে করেন, স্থানীয় আইনজীবী সমিতি ও রাজনৈতিক নেতাদের সহযোগিতায় জামিন হচ্ছে। এরপর সিদ্ধান্ত হয়, সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গ্রেপ্তারদের জামিন বিষয়ে আরও সতর্ক হতে হবে। জেলা প্রশাসকদেরও এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হবে।
গ্রেপ্তার ও জামিনের পরিসংখ্যান
পুলিশ সদর দপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, গত ১৩ মাসে ‘ফ্যাসিবাদের সঙ্গে জড়িত’ অভিযোগে ৪৪ হাজার ৪৭২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৭৩ শতাংশ—৩২ হাজার ৩৭১ জন জামিন পেয়েছেন।
মানবাধিকারকর্মীদের মত
মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, জামিন পাওয়া মানুষের মৌলিক অধিকার। তবে সঠিকভাবে মামলা দায়ের ও তদন্ত করা জরুরি। মানবাধিকারকর্মী নূর খান বলেন, “গত বছরের ৫ আগস্টের পর করা অনেক মামলাই হয়রানিমূলক। তাই স্বাভাবিকভাবেই আসামিরা জামিন পাচ্ছেন।”