সমাচার ডেস্ক
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপের ভোট মোটামুটি শান্তিপূর্ণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেছেন, ঝড়-বৃষ্টি ও ধান কাটার মৌসুম হওয়ার কারণে কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কম হয়েছে। ভোট শেষ হওয়ার পর আজ বুধবার (৮ মে) বিকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের মধ্যে ভোট পড়েছে। একটি কারণ হতে পারে বর্ষা, সকাল থেকে বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টি ছিলো। আবার ধান কাটার একটা মৌসুম ছিলো। আমরা জানার চেষ্টা করেছি। আমাদেরকে বলা হয়েছে, অনেকেই ধান কাটতে থাকায় উনারা ভোট দিতে আসেননি।
ভোট পড়ার হারে আপনারা সন্তুষ্ট কিনা? জানতে চাইলে সিইসি বলেন, এটাও আমি বলবো না। আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করেছি।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আপনারা ইতোমধ্যে জেনেছেন যে আজকে প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমরা এ পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গা থেকে যে তথ্য পেয়েছি সে অনুযায়ী নির্বাচন ভালোভাবেই অবাধ, নিরপেক্ষ এবং শান্তিপূর্ণ হয়েছে। কিছু কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটেছে। যেখানে কিছু সংঘর্ষ, কিছু আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। কয়েকটি কেন্দ্রে, সীমিত কয়েকটি জায়গায় কিছু অনিয়ম হয়েছে। যে কারণে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি। দুটি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করে দেয়া হয়েছে। আমাদের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে প্রশাসন, পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যথেষ্ট সতর্ক ছিলেন এবং দায়িত্ব পালনে তৎপর ছিলেন। তারা পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। সে কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যথেষ্ট ভালোই ছিলো। আমি বলবো না যে কোথাও কোনো ঘটনা ঘটেনি। কিছু কিছু খুবই বিক্ষিপ্ত সীমিত পর্যায়ে ঘটনা ঘটেছে।
সিইসি বলেন, আমাদের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের তথ্য অনুযায়ী ৩৪টি ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত ৩৭ জন। ভোটকেন্দ্রের বাইরে যে সংঘর্ষটা হয়েছে সেটা প্রার্থীদের যারা সমর্থক এবং কর্মী তাদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় কিছু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। ১০ হাজার ৩৯৯টি কেন্দ্রের মধ্যে দুটি কেন্দ্রের ভোট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। মোটামুটিভাবে নির্বাচনটা শান্তিপূর্ণ হয়েছে। যেটা আগেই বলেছি, পুনর্ব্যক্ত করলাম, বিক্ষিপ্ত দু-চারটি ঘটনা ছাড়া।
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ১৩৯ উপজেলায় ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। এখন চলছে গণনা। এই ধাপে ২২টি উপজেলায় ইভিএমে এবং ১১৭টিতে ব্যালটে ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে ভোটগ্রহণ চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। সকালে ভোটার উপস্থিতি কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা কিছুটা বাড়ে।
এবার স্থানীয় সরকারের এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে চার ধাপে। প্রথম ধাপে ভোটগ্রহণ করা হলো রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, বরিশাল, ফরিদপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের ১৩৯টি উপজেলা পরিষদে। এই ধাপে চেয়ারম্যান পদে ৫৭০, ভাইস চেয়ারম্যান ৬২৫ এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৪০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ইতিমধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৮, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১০ জন করে অর্থাৎ ২৮ জন ইতিমধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন। ২১ মে দ্বিতীয় ধাপে ১৬০টি উপজেলায়, ২৯ মে তৃতীয় ধাপে ১১০ উপজেলায় এবং ৫ জুন চতুর্থ ধাপে ৫০টির বেশি উপজেলায় ভোটগ্রহণ করা হবে।