আন্তর্জাতিক ডেস্ক
রাজধানী কোপেনহেগেনের রাস্তায় প্রকাশ্য দিবালোকে হামলার শিকার হয়েছেন ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন। এদিকে এই হামলার ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর আগে স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রীর ওপরও প্রকাশ্যে হামলার ঘটনা ঘটেছিলো। আজ শনিবার (৮ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানী কোপেনহেগেনের রাস্তায় প্রকাশ্যে হামলার শিকার হওয়ার পর ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন ‘মর্মাহত’ হয়েছেন বলে তার কার্যালয় জানিয়েছে। শহরের কেন্দ্রস্থলে একটি চত্বরে তার ওপরে এই হামলার ঘটনা ঘটে। মূলত একজন লোক প্রধানমন্ত্রী ফ্রেডেরিকসেন কাছে এগিয়ে গিয়ে তাকে আঘাত করে। ওই হামলাকারীকে ইতোমধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ভন ডার লিয়েন এই হামলাকে ‘ঘৃণ্য কাজ’ বলে অভিহিত করেছেন। তার মতে, এই হামলা এমন একটি কাজ যা আমাদের বিশ্বাস এবং ইউরোপে আমরা যার বিরুদ্ধে লড়াই করছি তার বিরুদ্ধে যায়।
ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেনকে শুক্রবার সন্ধ্যায় কোপেনহেগেনের কুলটোরভেটে একজন ব্যক্তি আঘাত করেন, যাকে পরে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এই ঘটনায় হতবাক হয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অবশ্য এই ঘটনায় আরো বিস্তারিত কিছু জানায়নি। পুলিশ বলেছে, তারা একজনকে আটক করেছে এবং ঘটনার তদন্ত করছে, তবে এর বেশি কিছু বলতে তারাও রাজি হয়নি। হামলার উদ্দেশ্য ঠিক কী ছিলো সে সম্পর্কে এখনো কিছু জানা যায়নি।
এদিকে মারি আদ্রিয়ান এবং আনা রাভন নামে দুজন প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় সংবাদপত্র বিটিকে বলেছেন, তারা ওই হামলার ঘটনা দেখেছেন।
ওই দুই নারী সংবাদপত্রকে বলেছেন, একজন লোক বিপরীত দিক দিয়ে এসে তার (প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেনের) কাঁধে সজোরে ধাক্কা দেয়, যার ফলে তিনি একপাশে পড়ে যান।
তারা আরো বলেন, ধাক্কাটি বেশ জোরালো’ হলেও প্রধানমন্ত্রী মাটিতে পড়ে যাননি। এরপর তিনি একটি ক্যাফেতে বসেন।
বিবিসি বলছে, ইইউ পার্লামেন্ট নির্বাচনে ডেনমার্কের ভোটের দুই দিন আগে এই হামলার ঘটনা ঘটলো। ডেনমার্কের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট নেতা মেটে ফ্রেডেরিকসেন এর আগে তার দলের প্রধান প্রার্থী ক্রিস্টেল শ্যালডেমোসের সাথে ইউরোপীয় নির্বাচনী ইভেন্টে অংশ নিয়েছিলেন।
ডেনমার্কের জোট সরকারের সবচেয়ে বড় দল সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটরা। তারা এখনো নির্বাচনে নেতৃত্ব দিচ্ছে, কিন্তু সাম্প্রতিক মাসগুলোতে তাদের সমর্থন অনেকটাই কমে গেছে।
ডেনমার্কের পরিবেশ মন্ত্রী ম্যাগনাস হিউনিকে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে বলেছেন, ‘মেটে স্বাভাবিকভাবেই এই আক্রমণে হতবাক। আমি অবশ্যই বলতে চাই, আমরা যারা তার ঘনিষ্ঠ এই হামলা আমাদের সকলকে নাড়া দিয়েছে।’
ইইউ প্রধান চার্লস মিশেল এক্স-এ বলেন, এই হামলার ঘটনায় তিনি ‘ক্ষুব্ধ’। তিনি বলেন, আমি এই কাপুরুষোচিত আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা জানাই।
এর আগে স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো সমর্থকদের অভ্যর্থনা জানানোর সময় হামলার শিকার হয়ে গুলিবিদ্ধ হন। সেই হামলার এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে এই হামলার ঘটনা ঘটলো।
স্লোভাক প্রধানমন্ত্রী অবশ্য সেই হামলায় বেঁচে গেছেন এবং তাকে অস্ত্রোপচারও করতে হয়েছে।